পরীক্ষা বাতিল চেয়ে অনশনরত ছাত্র অসুস্থ

ঢাবি প্রতিনিধি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে অনশনরত আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আখতার হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন আখতার।

গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন শুরু করেন আখতার হোসেন।

১২ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীন ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এই অভিযোগের মধ্যেই গত মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে ফল প্রকাশ করা হয়। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফলাফল প্রস্তুত হয়েছে। এটিকে আমরা অস্বাভাবিক মনে করছি না। প্রশ্নপত্র ফাঁসের নিশ্চিত কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।’

ফল প্রকাশের দিন থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন আখতার। আজ বেলা ১১টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সভা হয়। সভা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। তাঁরা বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলটিমেটাম দেয় যে বেলা ১টার মধ্যে আখতারের দাবিগুলো পূরণ করতে হবে।

বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাইমা হক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী উপাচার্য কার্যালয় থেকে বের হন। তাঁদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক যোগ দেন। তিনি সেখানে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরেন। এই দাবিগুলোর মধ্যে ছিল, যাচাইবাছাই করে ঘ ইউনিটের পরীক্ষা পুনরায় নেওয়া, পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার পলিসি ডিবেটের মাধ্যমে করা।

এরপর সবাই মিলে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আখতারের কাছে যান। আখতারকে তাঁরা অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। আখতার প্রক্টরকে বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কি না, আমাকে স্পষ্ট করে বলেন।’ সে সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরাসরি কিছু না বলে বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়। এমন সময় আখতার অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে রিকশায় করে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি এখন চিকিৎসাধীন আছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, ‘আখতারের গ্লুকোজ লেভেল মোটামুটি স্বাভাবিক হয়েছে। এরপরও তাঁকে গ্লুকোজ দিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি মুখে খেলে সুস্থ হবেন।’

আখতারের এক আত্মীয় জানান, আখতার যে অনশনে বসেছেন, তা বাসার সবাই জানে। তবে বর্তমান অবস্থা জানানো হয়নি।

২০১৫-১৬ সেশনে ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১৪ তম হওয়া আখতার হোসেন ভর্তি-ইচ্ছুক ১৩ জন ছাত্রকে পড়াতেন। এবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের পর ছাত্রদের একজনের প্রশ্ন ছিল, ‘স্যার, আমরা এত পড়াশোনা করলাম, কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় আমরা কি চান্স পাব? তাহলে কি আমরা দুর্নীতির কাছে হেরে গেলাম?’ ছাত্রের কাছে এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পারাই ছিল আখতার হোসেনের আমরণ অনশনে বসার প্রধান কারণ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির - dainik shiksha অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ - dainik shiksha বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031170845031738