পলিটেকনিক ইন্সটিটিউশন প্রয়োজন প্রতি উপজেলায়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত উন্নয়ন লাভ করলেও কারিগরি শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে। বিশেষ করে আশির দশকের পর কৃষি, শিল্প সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জিত হচ্ছে। তবে মানব সম্পদ উন্নয়নে দেশ বর্তমান পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগুতে পারছে না। উচ্চ কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন উত্পাদনব্যবস্থা এখানে চর্চা হচ্ছে না। নিম্ন কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন জলসেচ, আমদানিকৃত কীটনাশকের ব্যবহার, উচ্চ ফলনশীল শস্য বীজ এবং রাসায়নিক সার উচ্চতর কৃষি উত্পাদনে ভূমিকা রাখছে। নিম্ন কারিগরি ও নিম্ন মজুরির তৈরি পোশাকশিল্প রফতানি বাণিজ্যে বিশাল অগ্রগতি হয়েছে। শনিবার (৮ জুন) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন মো. আশারাফ হোসেন।

গত দুই দশকে কতিপয় শিল্প উদ্যোক্তা উচ্চ প্রযুক্তির কিছু শিল্প দেশে স্থাপন করেছে, যেগুলো কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন ও ব্যবস্থাপনায় দক্ষ লোকের অভাবে ভুগছে। পক্ষান্তরে লাখ লাখ বেকার কাজ পাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সকলে জানেন, ঐ সকল শিল্পসমূহ বিদেশ থেকে কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা পেশাদার লোক এনে চালানো হচ্ছে। এমনকি মত্স্য চাষের ক্ষেত্রেও আনা হচ্ছে বিদেশ থেকে লোক। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সমুদ্রগামী ছোট জাহাজ নির্মাণ করছে এবং দেশে-বিদেশে সরবরাহ করছে। মূলত জাহাজ নির্মাণে ফেব্রিকেশন কাজ এখানে হয়। জাহাজের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। জাহাজশিল্প দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।

কম গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ শিক্ষা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হারে সম্প্রসারণ হচ্ছে। অন্যদিকে বেশি প্রয়োজন এমন কারিগরি শিক্ষা সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের কাছে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব পাচ্ছে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান তার যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কারিগরি ডিপ্লোমা শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছিল। তারা তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করেনি, বরং এশিয়া মহাদেশের এক নম্বর অর্থনীতির দেশে পরিণত করেছিল। ধীরে ধীরে জাপান উচ্চ কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন শিল্প স্থাপন ও পরিচালনার মাধ্যমে বিশ্বে শিল্পোন্নত সাত দেশের একটিতে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ বৃহত্ জনগোষ্ঠী তরুণ বয়সের বলে এ দেশের উন্নয়নের একটি বিরাট সুপ্ত সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ ছাড়া ঐ সুপ্ত সুযোগ কাজে লাগানো যাবে না।

প্রতি উপজেলায় অন্তত একটি করে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পলিটেকনিক ইন্সটিটিউশন স্থাপন ও চালানো অপরিহার্য। ঢাকা মহানগরীতেও দশটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউশন প্রয়োজন। আগামী বছরগুলোতে দেশে যে শিল্প স্থাপন হবে তার জন্য দেশ থেকেই কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন লোকবল সরবরাহ করতে হবে। অন্যথায় অর্থনৈতিক অগ্রগতি স্বপ্নই থেকে যাবে। এটা সত্য যে, কারিগরি প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালন ব্যয়বহুল, কিন্তু এক্ষেত্রে রিটার্নও বৃহত্ ও দীর্ঘমেয়াদি। বর্তমান সময়ে তরুণদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার মধ্যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি নির্ভরশীল। যে হারে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত লোক তৈরি হচ্ছে, প্রয়োজনের বিচারে তা অতিরিক্ত। তাই কারিগরি শিক্ষায় বেশি অর্থ বিনিয়োগ সময়ের দাবি। সরকারের উচিত হবে প্রতি উপজেলায় এবং ঢাকা মহানগরে ডিপ্লোমা শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

ঢাকা


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029270648956299