রাজপথে আন্দোলনরত পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান। তাই শিক্ষার্থীদের রাজপথের আন্দোলন থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আর দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ার পরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা বলেও অভিযোগ করেছেন কারিগরি শিক্ষা সচিব।
রোরবার (১৭ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সচিব জানান, শিক্ষার্থীরা তাদের ইয়ার লস যাতে না হয় সে দাবি জানিয়েছেন। এজন্য কিছু কোর্সের সিলেবাস কমিয়ে আমরা সময় কমিয়েছি। ছয় মাসের কোর্সগুলো চার মাস করা হবে। সিলেবাস কমিয়ে শিক্ষার্থীদের কোর্সগুলো করতে হবে। তাই, তাদের ইয়ার লস হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না৷
তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন৷ আমরা ইতিমধ্যেই তাদের পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। সময় ও সিলেবাস কমিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিপ্লোমা পরীক্ষা নেয়া হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা শুরু না হলে অনেক কারিগরি শিক্ষার্থীদের কিছু পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা অটোপাস দেয়ার দাবি জানিয়েছেন উল্লেখ করে সচিব বলেন, তাদের অটোপাস দেয়া সম্ভব নয় কারণ এটি নূন্যতম যোগ্যতা তাদের অর্জন করতে হয়। এজন্য আমরা সিলেবাস কমিয়ে এবং অনেক প্রশ্ন উত্তর দেয়ার সুযোগ রেখে সহজ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ফি কমানোর দাবি জানিয়েছেন উল্লেখ করে আমিনুল ইসলাম খান আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের ফি কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সরকারি পলিটেকনিকের ফি আমরা ওয়েভ করেছি। বেসরকারি পলিটেকনিকগুলোর সাথে ফি কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কোন অতিরিক্ত ফি দিতে হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবির বিষয়ে কারিগরি শিক্ষা সচিব জানান, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, নড়াইল এবং খাগড়াছড়িতে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি ধারা থেকে এবং বাকি ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ ধারা থেকে ভর্তির সুযোগ দেবো।
আমিনুল ইসলাম খান আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামার আগেই আমরা তাদের এইসব সমস্যাগুলো সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। তারপরও তারা কেন আন্দোলনে নামলেন তা বোধগম্য নয়। যারা আন্দোলনে নেমেছেন তারা যে সংগঠনটির ব্যানার ব্যবহার করছেন তারা কখনও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড বা মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে তাদের দাবি-দাওয়া জানায়নি। লিখিতভাবে দাবি-দাওয়া না জানিয়ে হঠাৎ রাস্তায় নেমে পরেছেন। এ আন্দোলন শিক্ষার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য নাকি নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা সে প্রশ্ন তোলেন কারিগরি শিক্ষা সচিব।
এদিকে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সময় কমিয়ে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২০১০ ও ২০১৬ প্রবিধানের সব বিষয়ের ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা ২ ঘণ্টা ও ২ ঘণ্টার পরীক্ষা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট মেয়াদে নেয়া হবে। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রে মুদ্রিত মোট নম্বরের অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ উত্তর দিতে হবে। সব বিভাগের যে কোন প্রশ্ন থেকে শিক্ষার্থীরা ৫০ শতাংশ উত্তর দিতে পারবেন। আর পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরকে মোট নম্বরের বিপরীত রূপান্তরিত করে ফল নির্ধারণ করা হবে।
এভাবেই ২০১০ ও ২০১৬ প্রবিধানের ডিপ্লোমা পর্যায়ের পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৬ জানুয়ারি) কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে অনুষ্ঠিত ডিপ্লোমা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধ্যক্ষ ও পরিচালকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি বিবেচনায় ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা পরিচালনার লক্ষ্যে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। সভায় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সানোয়ার হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মোরাদ হোসেন মোল্লা।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব (লিংক যাবে) করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন