রাজধানীর পল্লবীতে হাফিজুর রহমান কাওসার (৯) নামে এক শিশুর লাশ মাদ্রাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে ‘মারকাযুল তারতীলিন’ কোরআন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ (হুজুর) জুনায়েদ বিন ইসহাকের তিন তলার রেস্ট রুমের বিছানা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পরিবার।
পল্লবী থানার ওসি দাদন ফকির বলেন, শিশুটি ‘মারকজু তারতীলিন’ কোরআন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৌচাগারে গলায় গামছা পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অধ্যক্ষ জুনায়েদ বিন ইসহাক পুলিশকে জানায়। তবে লাশ উদ্ধার করা হয় হুজুরের বিশ্রাম কক্ষ থেকে। পুরো বিষয়টি এখন পর্যন্ত রহস্যজনক মনে হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত হাফিজুর রহমান কাওসারকে দুই সপ্তাহ আগে মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বরের ১২ নম্বর সেকশনের ৫ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ির মারকাযু তারতীলিন কোরান নামের আরবি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়েছিল। তার বাবা দুলাল খান নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাতে ব্যবসা করেন। গতকাল সকালে ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে দ্রুত ওই কোরান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ছেলের লাশ দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। দুলাল খান দাবি করেছেন, তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।
কাওসারের বাবার অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়ে ওসি দাদন ফকির বলেন, শিশুটির মাথায় সামান্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে না সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শিশুটির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আমরা সকল চিন্তা মাথায় নিয়ে তদন্ত করছি। প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুলাল মিয়া বলেন, তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ। চার মেয়ের পর একমাত্র ছেলে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল তার। আদর করে ছেলের নাম রেখেছিলেন হাফিজুর রহমান কাওসার। রবিবার রাতের কোনো এক সময় তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে দুলাল খান বলেন, ‘আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না।’ তিনি যোগ করেন, এতটুক শিশু কি জন্য আত্মহত্যা করবে। সঠিক তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
পল্লবী থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম বলেন, শিশুটি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৌচাগারে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ঝুলে ছিল। সেখান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে অধ্যক্ষের রেস্ট রুমে নিয়ে আসে। প্রিন্সিপালকে জুনায়েদ বিন ইসহাককে খবর দেন। এরপর প্রিন্সিপাল থানায় ফোন করেন। প্রিন্সিপাল তাদের কাছে দাবি করেছেন, শিশুটি আত্মহত্যা করেছে। তবে প্রিন্সিপাল আত্মহত্যার কথা বললেও ঘটনায় রহস্য আছে।