পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে লাগামহীন ফি বৃদ্ধিসহ নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে সরব হয়েছেন অভিভাবকরা। এমনকি আদালতেও যেতে হয়েছে। সম্প্রতি আদালত এই অস্বাভাবিক হারে ফি বৃদ্ধির জন্য ভর্ৎসনা করেছে। রাজ্য সরকারের জবাবদিহিতাও জানতে চেয়েছে।
জানা গেছে, বেসরকারি স্কুলের ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। এ সব সমস্যার সমাধানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একজন সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ‘প্রাইভেট স্কুল রেগুলেটরি কমিশন’ গঠন করতে চলেছে। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এখন থেকে বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তা এই রেগুলেটরি কমিশনে জানানো যাবে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এই ধরণের কমিশন রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানানো যায়। এই রেগুলেটরি কমিশনও অনেকটাই সেরকম। বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ এই রেগুলেটরি কমিশনে জানানো যাবে। এই কমিশনের নাম দেওয়া হচ্ছে ‘প্রাইভেট স্কুল রেগুলেটরি কমিশন’।
সূত্র জানায়, এই রেগুলেটরি কমিশনের শীর্ষে রাখা হবে একজন সাবেক বিচারপতিকে। এ ছাড়া, কমিশনে থাকবেন রাজ্য সরকারের কয়েকজন প্রতিনিধি। তারা কোনো স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখবেন। সেক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট স্কুলের বিরুদ্ধে সুপারিশ করতে পারবে কমিশন। প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে।
প্রশাসনিক আধিকারিকরা মনে করছেন, এর ফলে যেমন বেসরকারি স্কুলের একরোখা মনোভাব রোখা যাবে, তেমনই অভিভাবকদের অভিযোগেরও অনেকটা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে কোভিডের সময় বেসরকারি স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে অভিভাবকেরা ব্যাপক হারে অভিযোগ করতে শুরু করেন। লকডাউনের জেরে বিভিন্ন অফিস, ব্যবসা-সহ সব কিছু বন্ধ থাকায় আর্থিক সমস্যায় পড়ছিলেন সাধারণ মানুষ। সেই সময়তে বেসরকারি স্কুলগুলো তাদের ফি কোনও ভাবেই কমাতে রাজি হচ্ছিল না বলে অভিযোগ করছিলেন অভিভাবকেরা। এমনকি ওই সময় ফি না দেওয়ায় বহু বেসরকারি স্কুল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে অনুমতি দিচ্ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকেরা। বেশ কিছু স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছিল। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের মধ্যে সমস্যা মেটাতে অনেক সময় হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল প্রশাসনকে। তাছাড়া প্রায়শই স্কুলে ভর্তির সময় এককালীন মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগও জমা পড়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে। করোনা সংক্রমণের সময় সেই অভিযোগের পরিমাণ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তার পরেই এই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল প্রশাসন।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।