দৈনিক শিক্ষাডটকম, বরগুনা : বরগুনার তালতলী উপজেলায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে তালুকদার পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি পাঁচ তলাবিশিষ্ট ভবনের কাজ দীর্ঘ পাঁচ বছরেও হয়নি। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় অতিবাহিত হলেও মাত্র তিনতলা পর্যন্ত আংশিক নির্মাণ শেষে কাজ ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বারবার ধরনা দিলেও কাজ হচ্ছে না। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে দেখা যায়, স্কুলের পুরাতন টিনশেড ঘরে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। পাঁচ তলাবিশিষ্ট ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের জন্য বাঁশ লাগানো রয়েছে।
জিজ্ঞেস করলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, এক বছর ধরে নতুন ভবনের কাজ বন্ধ আছে। এতে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমরান রহমান ও মিম জাহান রাজু বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে ছোট ছোট রুমে গাদাগাদি করে ক্লাস করানো হচ্ছে। এসব রুমে ক্লাস করতে তাদের ভালো লাগে না।
তারা জানায়, বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ছিল নতুন ভবনে ক্লাস করবে। কিন্তু এরইমধ্যে শিক্ষার্থীদের অনেকেই এসএসসি দিয়ে বিদ্যালয় ছেড়েছে।
জানা যায়,তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত হয়। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৫০০ জন। শিক্ষক ও কর্মচারী ২০ জন। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে তালুকদার পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ৩ হাজার নতুন স্কুল নির্মাণ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি পাঁচ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করতে বলা হয়। এ জন্য প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের বলেন, অনেক কষ্ট করে আমরা একটি ভবন পেয়েছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ ১ বছর ধরে কাজ বন্ধ আছে। আমরা জানি না, কেন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অবকাঠামো সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে ঠিকাদারি নিজাম বিশ্বাস বলেন, কাজ করানোর জন্য লোক ছিল না, যারা ছিল তারা কাজ করেনি। তবে কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লিটু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ওই স্কুলে আমি গিয়েছিলাম ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হয়েছে সে দেখা করার কথা বলেছে। তবে পরে আর দেখা করেনি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বলেছি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে আবেদন দিতে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার টুম্পা বলেন, আমরা হচ্ছে গত জেলা সমন্বয় সভায় এ ব্যাপারটি আলোচনা হয়েছে। যারা অনেক বছর ধরে এ রকমের ভবনের কাজ ফেলে রেখেছে, তাদের কাজ বাতিল করে নতুনভাবে কাজ দেবে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর।