পাঁচ মাস কর্মস্থলে না থেকেও পদোন্নতি পেলেন শিক্ষক

দৈনিক শিক্ষাডটকম, সিলেট |

বদলির আদেশ অমান্য করে সাড়ে ৫ মাস কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন এক শিক্ষক। এ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে তিনি নানা অনিয়ম করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। অধ্যক্ষ হতে না পারায় কলেজে যাননি দীর্ঘ ১৬ মাস। এ রকম অনেক অভিযোগ রয়েছে সিলেট সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাছিমা হক খানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২০ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে নাছিমা হক খানকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। বদলির আদেশ অমান্য করে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। এই অবস্থায়ই ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রজ্ঞাপনে তাকে সহযোগী অধ্যাপক (সংযুক্ত) দেখিয়ে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়া হয় ইন সি টু হিসেবে। পদোন্নতির আদেশে তার বর্তমান কর্মস্থল সিলেট সরকারি কলেজে দেখানো হয় এবং পুনরায় তাঁকে ইন সি টু হিসেবে পদায়ন করা হয়। যেকোনো পদোন্নতি নিতে হলে কর্মস্থলে কর্মরত থাকতে হয়। কিন্তু নাছিমা হক আগের কর্মস্থলে কর্মরত দেখিয়ে পদোন্নতি নেন।

পদোন্নতি পাওয়ার ১৫ দিন পর নাছিমা হক সিলেট সরকারি কলেজে যান। তখন কলেজে অধ্যাপক (ইন সি টু) পদে যোগদানের জন্য সহযোগী অধ্যাপকের পদ না থাকায় এবং আদেশে কর্মস্থল ভুল থাকায় তার আবেদন ফিরিয়ে দেন তৎকালীন অধ্যক্ষ আবুল আনাম মো. রিয়াজ। তিনি নাছিমা হকের যোগদানের সুযোগ নেই জানিয়ে ওই বছরের ১০ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর(মাউশির) চিঠি দেন।

এর কয়েক দিন পর আবুল আনাম মো. রিয়াজ মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে বদলি হন। তখন সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আসিফা আক্তার মিতুকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে যান। কিন্তু নাছিমা হক খান আবার তথ্য গোপন করে কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে তার কাছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব না দেয়ায় মাউশির মহাপরিচালক বরাবর পত্র দেখেন। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত বছরের ১ জুন নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক এ জেড এম মাঈনুল হোসেনকে পদায়ন দেয়।

এ ছাড়া নাছিমা হকের বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ ওঠায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১১ এপ্রিল দুদকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে মাউশি সিলেটের আঞ্চলিক পরিচালককে তদন্তের নির্দেশ দেয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই তদন্ত কর্মকর্তা অধ্যাপক মো. আব্দুল মান্নান খান ও অভিযুক্ত নাছিমা হক সিলেটের টিলাগড়ের গ্রিন টাওয়ারের বাসিন্দা এবং আত্মীয়।

অধ্যাপক মো. আব্দুল মান্নান খান বলেন, ‘তদন্তের কাগজপত্র আমি জমা দিয়ে দিয়েছি।’

অধ্যাপক নাছিমা হক খান দাবি করেন, তৎকালীন অধ্যক্ষের পাঠানো পত্র ভুল ছিল। কোথায় আছেন জানতে চাইলে ২২ অক্টোবর নাছিমা বলেন, এখন তিনি ছুটি নিয়ে ঢাকায় আছেন।

সিলেট সরকারি কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ আবুল আনাম মো. রিয়াজ বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত না করে এভাবে উনাকে দেয়া আমি মনে করি মাউশির ভুল হয়েছে।’

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ অনুবিভাগ) মোহাম্মদ খালেদ রহীম বলেন, ‘এটা হয়তো তখন আমাদের নলেজে ছিল না।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিওভুক্তির নতুন আদেশ জারি - dainik shiksha এমপিওভুক্তির নতুন আদেশ জারি জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি কুবির বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন - dainik shiksha কুবির বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি - dainik shiksha ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030848979949951