পাকুন্দিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষক বদলি, ছুটি অনুমোদন, বিদ্যালয়ের প্রতিবেদন তৈরি, অডিটের নামে ও স্লিপের টাকা ছাড় নিতে ঘুষ, শ্রেণিকক্ষ সুসজ্জিতকরণে দুর্নীতি, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে দুর্নীতি, বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার টাকা আত্মসাৎ ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে অসদাচরণসহ নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে এ শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষা অফিসের কর্মচারীদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার দ্বারা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে পারেন এমন ভয়ে কোনো শিক্ষক ও কর্মচারী প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না বলে তারা জানিয়েছেন।
শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ গত বছরের ১৭ আগস্ট পাকুন্দিয়া উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি টাকা ছাড়া শিক্ষকদের কোনো কাজই করছেন না। নূর মোহাম্মদ দুই হাতে ঘুষ, দুর্নীতিসহ সব অপকর্ম করে যাচ্ছেন। তিনি মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়ে শতাধিক শিক্ষককে নিয়মবহির্ভূতভাবে বদলি করিয়েছেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষকস্বল্পতা থাকলেও টাকার বিনিময়ে নিয়মের তোয়াক্কা না করে তার ইচ্ছামতো পোস্টিং দিয়েছেন। কোনো শিক্ষক ছুটি নিতে এলেও তাকে টাকা দিতে হচ্ছে।
টাকা ছাড়া নূর মোহাম্মদ শিক্ষকদের কোনো কাগজে স্বাক্ষর করেন না। এ উপজেলার ২০০টি বিদ্যালয়ের জন্য ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ এলে নূর মোহাম্মদ প্রতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়ে টাকা ছাড় দিয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের জন্য সরকার থেকে প্রতি বিদ্যালয়ে দুই হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। এ উপজেলায় ২০০ বিদ্যালয়ের জন্য চার লাখ টাকা বরাদ্দ এলে নূর মোহাম্মদ ওই টাকা কোনো বিদ্যালয়কে এখনও দেননি। এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলায় ৪০টি বিদ্যালয় বিজয়ী হয়। ওই বিজয়ী বিদ্যালয়গুলোকে এখনও কোনো ট্রফি দেননি নূর মোহাম্মদ।
এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি আরও বলেন, কিছু দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাত হোসেন বলেন, মোখিক অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।