পাঠ্যক্রমে যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা

মো. ইয়াকুব আলী |

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। মেরুদন্ড মজবুত না হলে কোন মানুষ বা যে কোন প্রাণি যেমন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তেমনি গুণগত মানসম্মত শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। মানসম্মত শিক্ষার জন্য মেধাবী ও যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকের প্রয়োজন। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত। তাই শিক্ষার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সকলকে সচেতন করে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে গুণগত শিক্ষা অর্জন করা যাবে। গুণগত শিক্ষা অর্জন করে ব্যক্তি জীবনের বুদ্ধিবৃত্তিয়, আবেগীয় ও মনোপেশিজ গুণাবলীর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে জাতিকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করতে সক্ষম হবে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য গুণগত শিক্ষার গুরুত্ব অপরিহার্য। শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গুণগত মানসম্মন্ন শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব।

শিক্ষার ইংরেজি EDUCATION শব্দটি LATIN শব্দ EDCARE থেকে এসেছে। যার অর্থ লালন-পালন করা বা বিকাশ ঘটানো।সে অর্থে শিক্ষা বলতে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি,আচার-আচরণ ও অভ্যাসঋকে পরিশীলিত করাকে বুঝায়। তাই শিক্ষা মানবজীবনের একটি অপরিহার্য বিষয়। মানুষকে মানবিক গুণের অধিকারী করার জন্য শিক্ষা যে একটি প্রাথমিক ও প্রয়োজনীয় কৌশল তা প্রত্যেক সমাজ ব্যবস্থাতেই স্বীকৃতি লাভ করেছে। শিক্ষা দ্বারাই উন্মোচিত হয় একটি জাতির ভবিষ্যতের সিংহদ্বার। শিক্ষাই আনবে ব্যক্তিজীবনের পরিপূর্ণতা। তাই যে কোন জাতির জন্য শিক্ষা ব্যক্তির কল্যাণ ও সমাজ কল্যাণের পথে গড়ে তুলবে নতুন ও আদর্শ সমাজব্যবস্থা।শিক্ষা হচ্ছে, মানুষের বিদ্যা-বুদ্ধির এরূপ উন্নয়ন সত্য,সুন্দর ও শিষ্টাচারের অনুরাগী হয়ে উঠতে পারে । শিক্ষা ব্যক্তির আচরণে জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

সক্রেটিস বলেছেন,মিথ্যাকে পরিহার করে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে শিক্ষা। সব মিলে বলা যায়,শিক্ষা হলো মানুষের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের জন্য বিশেষ সুসংবদ্ধ ও সচেতন প্রক্রিয়া। শিক্ষার ইংরেজি EDUCATION শব্দ বিশ্লেষণ করলে আমরা পাই, E-তে ENERGY = কর্মশক্তি, D-তে DEDICATION = উৎসর্গ, U-তে UNITY = একতা, C-তে CONTROL= নিয়ন্ত্রণ, A-তে ACTION = কর্মাদ্যোগ, T-তে TOTALITY   = সার্বিক দিক, I-তে INTALLIGENCE = বুদ্ধিমত্তা, O-তে OBSERVATION  = পর্যাবেক্ষণ ও N-তে NATIONALTY = জাতীয়তা। কোন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা অর্থাৎ EDUCATION অর্জন করতে হলে উপযুক্ত গুণগুলো আয়ত্ব করে নিজের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে হবে।

বর্তমান সময়ে সরকার,শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে বিভিন্ন পরীক্ষায় পাসের হার বৃদ্ধি ও অধিক জিপিএ প্রাপ্তি নিয়ে বেশ গর্ব ও স্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে  সরকার যদি শতভাগ পাস বা শিক্ষার পরিবর্তে মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষার ওপর গুরুত্বরোপ করতো, তবে তা দেশ, জাতি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করত। অথচ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একটি বিশাল অংশ যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করছে, তখন স্বভাবতই শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা কি শিক্ষার্থীদের মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষা দিতে পারছি, নাকি একটি বিশাল অংশ গোড়ায় গলদ রেখে সামনে অগ্রসর হচ্ছি ! শুধু তাই নয়,গুণগত শিক্ষা ও গবেণার কারণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও বিশেষ মানদণ্ডে পিছিয়ে পড়েছে, যা সত্যিকারভাবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ভাবিয়ে তুলেছে। যে দেশে শিক্ষার হার ও গুণগত মান যত বেশি, সেই দেশ অর্থনৈতিকভাবে তত বেশি উন্নত ও অগ্রসরমান।

আমাদের দেশে প্রাথমিক,মাধ্যমিক,মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে এবং শিক্ষার হারও বেড়েছে । এতে বোঝা যায়, শিক্ষায় অগ্রসর হয়েছে বটে ! তবে শিক্ষার গুণগত মান তেমন উন্নয়ন হয়নি। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদরাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাসের হার বাড়লেও শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে ভীষণভাবে পিছিয়ে পড়েছে। দেশে শিক্ষার গুণগত মান আশাব্যঞ্জক নয়। সর্বক্ষেত্রে গুণগত শিক্ষাই দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করে উৎপাদনশীল,সামাজিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতাসম্পন্ন দক্ষ মানবগোষ্ঠী তৈরি করে ন্যায়বিচার,বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা গঠন, সহযোগিতা ও সহনশীল মনোভাব তৈরির পরিবেশ নিশ্চিতে শিক্ষার সাথে জড়িত সকল মহলের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন হবে।

মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য প্রথমেই পিতা-মাতার ভূমিকা অপরিসীম। জন্মলগ্ন থেকেই সন্তানের শিক্ষা লাভ শুরু হয়। এমনকি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায়ও পিতা-মাতার গুণাবলী সন্তানের মধ্যে বিকশিত হয়। সন্তান যখন জন্মগ্রহণ করে, তখন সে থাকে অসহায়। বাবা-মা তাকে পরম যত্নে লালন-পালন করে বড় করে তোলেন।বাবা-মায়ের সান্নিধ্য সে সবচেয়ে বেশি লাভ করে। আর তাই তাদের ওঠা-বসা,কথা-বার্তা,সভ্যতা-ভদ্রতা,বিনয়-নম্রতা এসব কিছুর প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে এবং তারা এসব থেকে শিক্ষা লাভ করে। একজন আদর্শ পিতা-মাতাই পারেন সমাজকে আদর্শ জাতি উপহার দিতে।

গুণগত শিক্ষার জন্য সন্তানের পিতা-মাতাই প্রথম শিক্ষক ও অভিভাবক। যদিও আল্লাহ তায়ালা সন্তানের প্রথম ও আসল অভিভাবক।আল্লাহই সন্তানের  সকল অভাব  পূরণ করেন। তারপরও আল্লাহ তায়ালা পিতা-মাতাকেই অস্থায়ীভাবে সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দিয়েছেন। সন্তান-সন্তুতি পিতা-মাতার দর্পণস্বরূপ। পিতা-মাতা তাদের সাথে যে ব্যবহার করবেন,তাদের মধ্যেও সেই চারিত্রিক গুণাবলী বিকশিত হবে।বাল্যকাল থেকেই শিশুর গ্রহণ ও অনুকরণ করার অভ্যাস গড়ে ওঠে। সে যা দেখে, তারই অনুকরণ করতে শেখে। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন,পিতা স্বীয় সন্তানকে শিষ্টাচার অপেক্ষা উত্তম কিছু শিক্ষা দিতে পারেন না।। বড়দের শ্রদ্ধা এবং ছোটদের স্নেহ করার প্রশিক্ষণ দিতে হবে পিতা-মাতাকেই। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন,যে ব্যক্তি ছোটদের স্নেহ করেন না এবং বড়দের সম্মান করেন না ,সে আমার প্রকৃত উম্মত নয়।

আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে পিতা-মাতার মাধ্যমে একটি শিশু পৃথিবীতে আসে। আর আমরা দেখতে পাই ,সন্তানদেরকে স্কুল,কলেজ ও মাদরাসায় পাঠিয়ে দিয়েই পিতা-মাতা নিশ্চিন্তে বসে থাকেন আর কোন খোঁজ নেই! আমার সন্তান কী আসলে  শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্লাস করছে, না অন্য কোথাও গিয়ে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে বাজে আড্ডা দিচ্ছে!এমনি বেখেয়াল অবস্থায় এক সময় দেখা যায়, আদরের সন্তান এমন এক পর্যায়ে পৌছে যায়, যেখান থেকে ফিরিয়ে আনা আর সম্ভব হয়না। সময় থাকতেই সন্তানের প্রতি গভীর দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।

যেহেতু সন্তান-সন্তুতি আল্লাহ তায়ালার অসীম নেয়ামত। কোনো সন্তানই জন্ম থেকে খারাপ থাকে না। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বা পিতা-মাতার অবহেলার কারণেই  সন্তান  বিপথে পা বাড়ায়। 

আমরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। যারা আমাদের পড়ান, তাঁরা আমাদের শিক্ষক। শিক্ষার জন্য আমাদের শিক্ষকের সান্নিধ্যে আসার প্রয়োজন হয়। ইসলামে শিক্ষার ও শিক্ষকের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, যারা জানে আর জানে না-তারা কি সমান হতে পারে ? শিক্ষার শেষ নেই। যে যত বেশি জ্ঞান অর্জন করেন, তিনি তত বেশি জ্ঞানী। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত শিক্ষা অর্জন কর।

গুণগত শিক্ষার সাথে শিক্ষক সরাসরি জড়িত। তাই শিক্ষকের কথাই বলি। শিক্ষকের ইংরেজি TEACHER শব্দটি বিশ্লেষণ করলে আমরা পাই T- তে TALENTED=কোন কিছু উত্তমরূপে করার নৈসর্গিক ক্ষমতা,E-তে-ELEGANT= রুচিশীল,A তে-AWESOME=দারুণ, C তে-CHARMING   = আকৃষ্ট করা, Hতে-HELPFUL=উপকারি, E তে-EFFICIENT= সুদক্ষ, R -তে-RECEPTIVE=আশুগ্রাহী ইত্যাদি। শিক্ষক নিজের গুণ অর্জন করে নিজ দায়িত্ব পালন করলেই গুণগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দ্বার খুলে যাবে। শিক্ষক হচ্ছেন, শিক্ষার্থীর জন্য একজন সংশোধনকারী ও পথ-প্রদর্শক। কারো পক্ষে কোন শিক্ষকের মাধ্যম ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা সম্ভব নয়। যে ব্যক্তি শিক্ষক ছাড়া শুধু বই –পুস্তুক পড়ে বিদ্যা অর্জন করেন, তিনি কোনদিন শিক্ষার পূর্ণতায় পৌছতে পারেন না। কথায় আছে, যার কোন শিক্ষক নেই , তার শিক্ষক শয়তান। ইসলাম শিক্ষককে মহান ব্যক্তিত্ব ও শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে স্বীকৃতি দান করেছে,যার বিবরণ কোরআন ও হাদিসে পাওয়া যায়। করুণাময় শিক্ষা দিয়েছেন কোরআন। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা নিজেই সর্বপ্রথম শিক্ষক। 

আদর্শ শিক্ষক হলেন, স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা। ফেরেশতারা বলেছিলেন,হে আল্লাহ আপনি যা শিখিয়েছেন, তা ছাড়া আমাদের কোনই জ্ঞান নেই,নিশ্চয় আপনি মহাজ্ঞানী। আল্লাহ তায়ালা নবী-রসূলদের শিক্ষক হিসেবে পাঠিয়েছেন। প্রিয় রসূল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর পূর্ব প্রেরিত নবীরা সবাই ছিলেন  মহান শিক্ষক। 

শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষকের। একজন ছাত্রকে কেবল শিক্ষিতই নয়,বরং ভাল মানুষ করে গড়ে তোলার গুরু দায়িত্বটাও থাকে শিক্ষকের ওপর। 

শিক্ষার্থীর ভূমিকাই গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার মূল চাবিকাঠি। শিক্ষার্থীর আগ্রহ ও ইচ্ছার ওপর নির্ভর  করে শিক্ষার সফলতা ও ব্যর্থতা।তাই শিক্ষার্থীকেই গুণগত শিক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। আজকের শিশুদের কেউ বা হবে আগামী দিনের প্রকৃত মানুষ,আর প্রকৃত মানুষ হতে পারলেই তারা হতে পারবেন শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী।আবার কেউ হবেন শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী,দার্শনিক,রাজনীতিবিদ,লেখক,কবি ও সাংবাদিক । 
(১) শিক্ষক হচ্ছেন পিতা-মাতার সমতুল্য। তাই পিতা-মাতার পরেই শিক্ষকের সাথে সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে।(২) শিক্ষকের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা থাকতে হবে।শিক্ষকের সাথে ভক্তি সহকারে কথা বলতে হবে।(৩) বিনয়ের সাথে কথা-বার্তা ও আচার-আচরণ করতে হবে। 

কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। কয়েক মাস আগের কথাই বলি,রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল নিজ হাতে কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছেন। এ বিষয় একজন ছাত্র লজ্জায়–ক্ষোভে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন।এর প্রেক্ষিতে ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করলে ,সেই আন্দোলন থামানোর জন্য কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করেন। 

গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার অন্যতম উপায় হলো, মানসম্মত মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্যে ভাল শিক্ষাগত যোগ্যতার অধিকারী মানসম্পন্ন শিক্ষক স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিযোগ করতে হবে। সব শিক্ষকের জন্য বিষযভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। 

গুণগত শিক্ষার জন্য কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষাকেও প্রাধান্য দিতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-তে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির জন্য শিক্ষাকে সৃজনশীল ও প্রয়োগমুখী করে তুলতে হবে। 

আশার কথা এই , এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য বর্তমান সরকার নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে সমন্বয়হীনতা উপলব্ধি করে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর বিষয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন সরকার। ফলে শিক্ষার্থীও যাবে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শ্রেণিকক্ষে। পরিকল্পনা গ্রহণ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মনোযোগী হওয়া।

গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা অর্জন ও স্থায়ীকরণের জন্য আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাক্রম, যোগ্যতাসম্পন্ন ও শিক্ষার প্রতি আগ্রহী শিক্ষক নিয়োগ,প্রয়োজনীয় সুযোগ দিয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতায় এনে ধরে রাখা। সন্ত্রসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন,দুর্নীতি নির্মূল পরিবেশ,অপচয়রোধ ও শিক্ষায় অধিক বিনিয়োগ একান্ত প্রয়োজন। এসব শর্তপূরণের ওপর নির্ভর করে গুণগত শিক্ষার মান ও মাত্রা। গুণগত শিক্ষার বর্তমান প্রেক্ষাপট একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। এটি উন্নয়নশীল বিশ্বেও শিক্ষাবিদদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো টেকসই উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে গুণগত শিক্ষার ধারণা ও গুরুত্ব বিশেষভাবে তুলে ধরছেন। এজন্য পরিমাপগত নয়, সরকার,শিক্ষাক,অভিভাবক,পিতা-মাতা ও শিক্ষার্থীসহ সকলের  সামগ্রিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে অর্জিত হবে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা। ফলে জাতি বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

লেখক : মো. ইয়াকুব আলী, প্রভাষক (বাংলা), পয়সা কারামাতিয়া আলিম মাদরাসা, লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002964973449707