পাঠ্যবই: ফরমায়েশি রিপোর্টে পুনঃদরপত্রের ধান্দা!

মুরাদ মজুমদার |

আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য পাঠ্যবই ছাপার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১৩ জুন পাঠ্যবই ছাপাসংক্রান্ত দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়। সরকার ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩৪ কোটি ৬১ লাখ বই ছাপার উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের বই ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার। বাকিটা মাধ্যমিক স্তরের বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য। উল্লিখিত বইয়ের মধ্যে প্রাথমিকের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির দরপত্রই ১৩ জুন উন্মুক্ত করা হয়। ৯৮ লটে এসব বই ছাপানো হবে। এ মাসে প্রাক-প্রাথমিকের দরপত্রও উন্মুক্ত হওয়ার কথা আছে। বিনামূল্যের এই বই মুদ্রণের কাজটির দায়িত্বে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।

জানা গেছে এরই মধ্যে তৎপর হয়েছে মুদ্রাকর সিন্ডিকেট। কাজ বাগাতে মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবির ক্ষমতাবানদের চ্যালা-চামুন্ডা ছাড়াও এদের অন্যতম হাতিয়ার কতিপয় নামধারী সাংবাদিক। অতি মুনাফায় ঘাটতি পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলেই ফরমায়েশি প্রতিবেদন প্রকাশ করাতে ব্যবহার করা হয় কতিপয় পত্রিকা ও টিভির নামধারী সাংবাদিকদের। পাঠ্যপুস্তক ছাপার কাজে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা, প্রকাশক ও মুদ্রকার এমন মত প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদেরর বার্তাকে বলেন, গতকাল রোববার একটি বাংলা দৈনিকে একটি ‘ফরমায়েশি’ প্রতিবেদন প্রকাশ করানো হয়েছে। ধান্দা পুন:দরপত্র। প্রতিবেদনটি দেখে অনেকেই হাসাহাসি করেছেন। ’

তিনি বলেন, ‘ওই পত্রিকার প্রতিবেদনটি বিভিন্ন জায়গায় বিতরণের পর আজকালের মধ্যে এনিসিটিবিতে ওই সিন্ডিকেট সদস্যরা আসবেন। ধান্দা থাকবে পুন:দরপত্র। তবে, তারা জানেন না যে আমাদের বর্তমান চেয়ারম্যান মহোদয়কে নিযুক্ত করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি কোনো সিন্ডিকেটের কাছে মাথা নত করবেন না।’ 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়ার কিছু স্তরে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত কিছু তথ্য গোপণ থাকার বিধান রয়েছে। টেন্ডারের সেসব ধাপ অতিক্রম না হলে প্রক্রিয়া নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো মতামত প্রকাশ করতে পারছি না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, অগ্রনীকে কাজ পাইয়ে দিতে অনেকেই তদবির করে থাকেন। তদবিরবাজদের নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি। তবে, বলেন, অনিয়মের দায়ে কালো তালিকাভুক্ত করা প্রতিষ্ঠান নাম বদল করে বা তদবির করে আবার নতুন টেন্ডারে অংশ নেয়। এই তদবির আসে উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ শাখার কর্মকর্তাদের কাছেও। কালো তালিকাভুক্তদের মধ্যে ন্যাশনাল (মাতুয়াইল), ইউনিক ও প্লাসিড খুব পাওয়াফুল হিসেবে এনসিটিবি পাড়ায় পরিচিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, মানসম্মত ও সময়মতো পাঠ্যবই ছাপায় বিঘ্নসৃষ্টিকারী কোনো সিন্ডিকেটই ছাড় দেওয়া হবে না।  


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, শুরু ১৭ আগস্ট - dainik shiksha এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, শুরু ১৭ আগস্ট ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে সেরা যারা - dainik shiksha ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে সেরা যারা শিক্ষকদের জন্য পৃথক পে-স্কেলের চিন্তা করছেন প্রধানমন্ত্রী : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকদের জন্য পৃথক পে-স্কেলের চিন্তা করছেন প্রধানমন্ত্রী : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী কমী নিয়োগে শিক্ষা সনদ চাইবে না নগদ - dainik shiksha কমী নিয়োগে শিক্ষা সনদ চাইবে না নগদ কৃষি গুচ্ছে আবেদন শুরু - dainik shiksha কৃষি গুচ্ছে আবেদন শুরু অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস, স্কুলের নামও ভুল - dainik shiksha অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস, স্কুলের নামও ভুল শিক্ষকের ওপর হামলাকারীকে শাস্তি দাবি, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ - dainik shiksha শিক্ষকের ওপর হামলাকারীকে শাস্তি দাবি, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025639533996582