পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংকট তৈরি করছে উপাচার্যরাই

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় নানা সংকটে জর্জরিত। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনৈতিক ভর্তি, তো কোনটাতে ছাত্রলীগের নেতাদের চাঁদার টাকার ভাগ করে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। আর এসব অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপাচার্যদের বিরুদ্ধে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছেন। আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বলেছেন ‘রাজাকারের বাচ্চা’। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

এসব অভিযোগের কথা লিখতে আমাদের দ্বিধা হচ্ছে, কিন্তু এ ধরনের অন্যায়-অপকর্ম করতে উপাচার্যরা দ্বিধান্বিত হচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলতে নীতি-নৈতিকতা, প্রজ্ঞা, সদাচরণ প্রভৃতি মানবীয় গুণাবলিসম্পন্ন মানুষের যে মূর্তি সাধারণ মানুষের মনে ভেসে ওঠে তার সঙ্গে উল্লিখিত উপাচার্যদের মেলানো যায় না। তাদের কর্মকান্ড দেখে প্রশ্ন জাগে যে, একটি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেরানি হওয়ার মতো যোগ্যতাও কী তাদের আছে। অথচ তারাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বৃহৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপাচার্য হয়েছেন। কেউ কেউ আবার দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকত্বের আসনে আসীন হয়েছেন। আসনটাই শুধু পেয়েছেন তারা, অভিভাবকত্বের কোন গুণাবলি তাদের মধ্যে দেখা যায় না। এসব উপাচার্য নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আস্থা অর্জন করতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা আর শিক্ষার্থীদের মঙ্গলের চেয়ে নিজেদের অন্যায় ফায়দা এবং বিশেষ একটি দলের ক্যাডারদের নানা সুযোগ-সুবিধা দেয়াই তাদের একমাত্র কাজ। তাদের অন্যায়-অপরাধ জনসম্মুখে প্রকাশিত হলেও তারা নির্লজ্জের মতো পদ আঁকড়ে থাকেন। এবং স্বপদে বহাল থাকতে জাতির সামনে নির্দ্বিধায় মিথ্যাচার করেন।

প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় বিবেচনায় উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় দলীয় শিক্ষক এবং শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের গুন্ডাদেরকে যিনি আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতে পারবেন তাকেই উপাচার্য পদে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেয়ার কারণে উপাচার্যের পদ কলুষিত হয়ে পড়েছে। এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের রাজনৈতিক খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হতো, এখন ব্যবহার করা হচ্ছে শিক্ষকদের। যার কুফল দেশবাসী এখন দেখতে পাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবিলম্বে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। বিতর্কিত উপাচার্যদের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে আমরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই সংকটের সময় তিনি অভিভাবকসূলব ভূমিকা রাখবেন- সেটা আমাদের প্রত্যাশা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047459602355957