পাহাড়ের গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ হচ্ছে কলেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাঙামাটি জেলার দুর্গম পাহাড়। এখানকার নানিয়ার চর উপজেলার ঘিলাছড়ি, বুড়িঘাট, কুতুকছড়ি, সাবেক্ষ্যং ও সাপছড়ি ইউনিয়নের মানুষ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। তবে তারা তাদের প্রজন্মকে আর অন্ধকারে রাখতে চাইছে না। তাই এসব ইউনিয়নের নারী-পুরুষরা নেমে পড়েছে স্বেচ্ছাশ্রমে কলেজ নির্মাণে। কুতুকছড়ি ইউনিয়নে প্রায় ৮০ শতক জমির ওপর তারা বাঁশ আর কাঠ দিয়ে নির্মাণ করছে জ্ঞানের আলোর এই ঠিকানা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানুষ নিজেদের উদ্যোগে দিনরাত কাজ করছে কলেজ নির্মাণে।

এই ফাঁকে তারা কলেজের নামও ঠিক করে ফেলেছে। রাঙামাটির চেঙ্গী নদীর শাখা খালের নামে কলেজটির নাম রাখা হয়েছে ‘মাউরুম কলেজ’। এখনো নির্মাণকাজ শেষ হতে বেশ বাকি থাকলেও পুরোদমে কাজ চলছে। স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে এসেছেন গ্রামের নারীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। তাদের কেউ পাহাড় থেকে বাঁশ কেটে এনে এবং কেউ কাঠ নিয়ে এসে সহযোগিতা করছেন। আবার কেউ সেগুলো জায়গামতো স্থাপন করছেন। কেউ মাটি কাটছেন। এভাবেই চলছে নির্মাণকাজ। কেউ থেমে নেই মুহূর্তের জন্যও। এই মহতী ও দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী উদ্যোগের বিষয়ে কুতুকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কানন চাকমা বলেন, রাঙামাটি জেলা থেকে নানিয়ার চর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার।

তাই পাহাড়ি অঞ্চলের এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়ার জন্য রাঙামাটি শহরে যাওয়া খুব কষ্টকর। এই সঙ্গে সবারই আছে অর্থ সংকট। যাতায়াত ও আবাসনসহ নানা জটিলতার জন্য অনেক শিক্ষার্থী মাধ্যমিক অবস্থায়ই ঝরে পড়ে। তাই পাহাড়ি অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে ছয় ইউনিয়নবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি বিরল দৃষ্টান্ত। নির্মাণাধীন মাউরুম কলেজ কমিটির সভাপতি ও ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অমর জীবন চাকমা বলেন, ‘নানিয়ার চরে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি ছিল দীর্ঘদিনের।

তাই এলাকার শিক্ষা উন্নয়নের কথা চিন্তা করে কারও আশায় বসে না থেকে নিজেরাই কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য নেমে পড়েছেন এলাকাবাসী। কলেজের জন্য প্রায় ৮০ শতক জমি দান করেছেন স্থানীয় নয়ন জীবন চাকমা। জমি পেয়ে কলেজ নির্মাণের উৎসাহ বেড়েছে স্থানীয়দের। এটি নির্মাণ করা হচ্ছে ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২১ ফুট প্রস্থে। কলেজে শ্রেণিকক্ষ থাকছে আটটি। আশা করি খুব দ্রুতই নির্মাণকাজ শেষ হবে। ’ জানা গেছে, নির্মাণকাজের পাশাপাশি উদ্যোক্তারা কলেজের পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038900375366211