পা কাটার টাকা যোগাতে ভিক্ষায় নেমেছেন এক শিক্ষক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি |

যে হাতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি কিন্ডার গার্ডেন স্কুল আজ সেই হাতেই ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এক শিক্ষক। বাড়ি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার কুমিরা ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামে। এলাকায় তিনি আলম মাস্টার নামে পরিচিত।

১৩-১৪ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পাটকেলঘাটার মেলে­কবাড়ি কিন্ডার গার্ডেন স্কুল। ছিলেন সেখানকার প্রধান শিক্ষক। হাজার হাজার শিশুর মাঝে ছড়িয়েছেন শিক্ষার আলো। আর সেই শিক্ষকের আলো আজ নিভে যেতে বসেছে। ৪ বছর আগে হঠাৎ প্যারালাইজড হয়ে পড়েন এই শিক্ষক। এরপর সেটি গ্যাংগ্রিনে রুপ নেয়। অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা করাতে না পেরে বর্তমানে ভিক্ষা করছেন তিনি।

আলম মাস্টারের শ্বশুর শেখ আতিয়ার রহমান  জানান, ১০ বছর আগে আমার মেয়ে হালিমা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। এরপর থেকে এখানেই বসবাস। ৪ বছর আগে হঠাৎ প্যারালাইজড হয়। বাড়িতে অচল হয়ে পড়ে ছিল বছর খানেক। এরপর ডান পায়ে গ্যাংগ্রিনে রুপ নেয়। এরই মধ্যে চিকিৎসার কাজে তার গচ্ছিত সব টাকা খরচ হয়ে যায়। ৩ বছর আগে চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে মাস খানেক পর ডাক্তার বলেন, পা কেঁটে ফেলতে হবে। কিন্তু টাকার জন্য আর কাঁটা হয়নি। আমি দিনমজুর মানুষ। কোনো রকমে দিন চলে, বাড়তি কোনো টাকা নেই। যার কারণে আর চিকিৎসা করা হয়নি।

এক ছেলে সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে শিক্ষক আলমের। তাদের মুখে খাবার তুলে দিতে এখন ভিক্ষা করছেন তিনি। সকাল হলেই ভিক্ষার থলে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন পাটকেলঘাটার বিভিন্ন অঞ্চলে।

স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিলো। হঠাৎ স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেলো। একদিকে টাকার জন্য স্বামীর চিকিৎসা হয় না অন্যদিকে নিরুপায় হয়ে খাবারের জন্য ভিক্ষা করতে হয়। ঘর-বাড়িও ভাঙাচোরা।

স্থানীয়রা জানান, ১৩-১৪ বছর আগে পাটকেলঘাটার মেলেকবাড়ি কিন্টার গার্ডেন স্কুল নির্মাণ করেছিলেন আলম মাস্টার। তিনি ছিলেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আর্থিক অবস্থা ভালোই ছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ তাকে ভিক্ষা করতে হচ্ছে। দেখে আমাদের খারাপ লাগে কিন্তু কি করবো বলুন।

শিক্ষক মো. আলম বলেন, আমি কঠিন রোগে ভুগছি। রোগের চিকিৎসা করাতে আমার সব কিছুই শেষ হয়ে গেছে। এখন সম্বলহীন। বাড়িতে ছোট একটা ছেলে আর স্ত্রী রয়েছে। তাদের মুখে দুবেলা খাবার দিতে পারি না। কোনো কাজও করতে পারি না। অসহায় হয়ে এখন ভিক্ষা করছি।

কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আজিজুল ইসলাম বলেন, আলম মাস্টার অসুস্থ তবে আমার কাছে কখনও আসেনি। যার কারণে কোনো সাহায্য সহযোগিতাও করা হয়নি।

শিক্ষকের চিকিৎসার জন্য তার স্ত্রী হালিমা বেগম হৃদয়বান মানুষের কাছে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002687931060791