কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় চট্টগ্রামেও টার্গেট করা হয়েছিল পুলিশ ও তাদের স্থাপনা। এতে জড়িত ছিলেন চিহ্নিত শিবির ক্যাডার ও ছাত্রদল নেতারা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই করে এবং ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এ তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গত ১৮ জুলাই বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সে হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং চান্দগাঁও থানায় হামলার ঘটনা ঘটে।
থানার মূল ফটক ভাঙচুর করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। ১৯ জুলাই নগরের আন্দরকিল্লা থেকে বের করা মিছিল থেকে নিউমার্কেট ও কাজীর দেউড়ি এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়। সপ্তাহকাল ধরে চলা তাণ্ডবে হামলার শিকার হন ৪৫ জন পুলিশ সদস্য। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুলিশের ১৩টি গাড়িসহ চারটি মোটরসাইকেল। দুর্বৃত্তদের হামলায় চারটি সার্ভিস সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সে হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং চান্দগাঁও থানায় হামলার ঘটনায় মোট ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এছাড়া পুলিশ বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ৬টি, কোতোয়ালী থানায় ৪টি, বাকলিয়া থানায় ১টি, খুলশী থানায় ১টি ও হালিশহর থানায় ১টি মামলা দায়ের করেছে।
নাশকতার ১৮ মামলায় এ পর্যন্ত নগরে মোট ৪১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে চলা সংঘর্ষে আহত সিএমপির অনেক পুলিশ সদস্য এখন চিকিৎসাধীন। হামলায় সব মিলিয়ে সিএমপির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকার সম্পদ।
সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, নাশকতায় জড়িত বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে সরকারি সম্পদ ধ্বংস করার পরিকল্পনার তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশের ওপর হামলার নির্দেশনা দেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আনাছ উদ্দিন চৌধুরী। এই শিবির কর্মী গত ১৮ জুলাই বহদ্দারহাটে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত ছিলেন। ছাত্র আন্দোলনকে পুঁজি করে সেদিন তার ইন্ধনে চান্দগাঁও থানা ও পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। তার মোবাইলে দেখা গেছে- পুলিশকে মারার নির্দেশনা সম্বলিত বার্তা।
পাশাপাশি সেদিন বহদ্দারহাটে সক্রিয় ছিলেন মহসিন কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবদুল আলী রাব্বী। নিজের মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করে তিনি বিভিন্ন স্লোগান দেন। আগুন লাগানোর নির্দেশনার পাশাপাশি কয়েকটি স্থানে হামলা ও ভাঙচুরে নেতৃত্ব দেন।
সিএমপি’র উপ-কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে সহিংসতায় যুক্তরা এবারও সক্রিয় ছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল- ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা করা। এদের অনেকেই এর আগে গ্রেফতার হয়েছিল। পরে জামিন পেয়ে তারা আবারও একই ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে।