পুলিশের নির্দেশে প্রেস ক্লাব ছাড়লেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা

ঢাবি প্রতিনিধি |

সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে মানোন্নয়ন পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের দাবি মেনে না নেয়ার এক দফা দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আমরণ অনশনে কর্মসূচি পালন করতে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে ঘণ্টা দুয়েক খানেক অবস্থানের পর পুলিশ সদস্য তাঁদের স্থান ত্যাগের নির্দেশ দিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাব ত্যাগ করেন।  

রোববার প্রেস ক্লাবের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণ অনশন শুরু করেন আন্দোলনরতরা। পরে পুলিশ চলে যেতে বললে, স্থানত্যাগ করে তারা বাসায় ফিরে যান। দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র তসলিম চৌধুরী।

তিনি জানান, আমরা সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে আমাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করি। পরবর্তীতে পুলিশ সদস্যরা আমাদের স্থান ত্যাগ করতে বলে। তারা আমাদের বলেন, তাদের যতোটুকু করার তারা করেছেন। এখন এইখান থেকে চলে যেতে হবে। তাই এমন নির্দেশনা পেয়ে কোনো বাগবিতণ্ডা না গিয়ে আমরা স্থানত্যাগ করি। পরে সবাই যে যার বসাতে ফেরত গেছেন।

তিতুমীর কলেজের এই শিক্ষার্থী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য ম্যামের সঙ্গে ঢাবি কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠক চলছে। আশা করি আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া পাবো। যদি না পাই সেক্ষেত্রে আগামী ২২ আগস্ট আমাদের একটি কর্মসূচি দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

এর আগে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের আরেক মুখপাত্র মোখলেসুর রহমান রবিন বলেন, অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষার ফল তিন মাসে দেয়ার কথা থাকলেও সেখানে সাত-আট ও নয় মাস পর ফল দিয়েছে। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাত কলেজের ফল নয় মাস পর দিয়েছে, এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা পরবর্তী বর্ষের ক্লাস করেছে এবং সেই অনুযায়ী পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিয়েছে। এছাড়া সব ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা অংশগ্রহণ করার পরও ফল প্রকাশের পর অনেকে শিক্ষার্থী ৮ থেকে ১০ টি কোর্সের মধ্যে ন্যূনতম এক থেকে সর্বোচ্চ তিন সাবজেক্ট পর্যন্ত অকৃতকার্য হয়েছেন। যার ফলে ‘সামান্য সিজিপিএ সিস্টেমের কবলে পড়ে’ হাজার হাজার শিক্ষার্থী তারা কিন্তু পরবর্তী বর্ষে বর্ষের প্রমোশন পাচ্ছে না। 

তিনি আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নিয়ম সেই নিয়মের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আমরা তাদের নিয়ম মানতে চাই কিন্তু এই নিয়মটা আমরা মানতাম যদি আমাদের ফল তিন মাসের মধ্যে প্রকাশ করা হতো। তিন মাসের মধ্যে ফল দিলে আমরা জানতে পারতাম, তাহলে সে লক্ষ্যে প্রিপারেশন নিতাম। প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় একই নিয়ম রয়েছে। সেই সঙ্গে অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রত্যেক অধ্যক্ষ আমাদের দাবির সঙ্গে একত্বতা প্রকাশ করেছেন। তাই অবিলম্বে আমাদের দাবি বাস্তবায়নের অনুরোধ জানাচ্ছি। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাবি অধিভুক্ত কলেজের ২০১৭-১৮, ২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১ সেশনের সকলের এক দফা দাবি সেটি হলো বিলম্বিত প্রকাশের জন্য মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তিন বিষয়ে মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন। যেহেতু পরবর্তী বর্ষের জন্য অনেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে এবং ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। তাই সিজিপিএ বা জিপিএ শর্তের জন্য বিগত বর্ষের সব বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব না। নির্ধারিত জিপিএ বা সিজিপিএ শিথিল করে, তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন আমাদের সকলেরই যৌক্তিক দাবিতে পরিণত হয়েছে।

এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ও ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ - dainik shiksha সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ কারিগরির এসএসসি ও দাখিলের রেজিস্ট্রেশনের সময় ফের বাড়লো - dainik shiksha কারিগরির এসএসসি ও দাখিলের রেজিস্ট্রেশনের সময় ফের বাড়লো প্রাথমিকের ডিজির অপসারণ ছাড়া কাজে ফিরবেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা - dainik shiksha প্রাথমিকের ডিজির অপসারণ ছাড়া কাজে ফিরবেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘তুমি কে আমি কে? আদুভাই আদুভাই’ স্লোগান শেকৃবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ‘তুমি কে আমি কে? আদুভাই আদুভাই’ স্লোগান শেকৃবি শিক্ষার্থীদের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে একগুচ্ছ প্রস্তাব - dainik shiksha মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে একগুচ্ছ প্রস্তাব ঢাবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ - dainik shiksha ঢাবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002687931060791