প্রকল্প বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি ব্যয় বাংলাদেশে: শিক্ষা উপদেষ্টা

দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক |

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখা। সে চেষ্টাই করছে সরকার। তবে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী শুধু জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) বাড়লেই অর্থনীতি ভালো হয় না। এজন্য টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই সরকারের লক্ষ্য।  তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতির বিষয়টি দেখা হবে। কেননা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা হয়েছে এদেশের প্রকল্প বাস্তবায়নে। এ কাজে একটু সময় লাগবে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত তার কার্যালয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রশ্ন : উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আপনারা কী ভাবছেন?

ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ : রাজনৈতিক সরকারের আমলের মতো দেশে আর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প থাকবে না। গত দেড় দশকে নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। বড় বড় প্রকল্প কেন এতবার সংশোধন করা হয়েছে, নকশা কেন সংশোধন করতে হয়েছে, বারবার সংশাধন ও ব্যয় বাড়াতে হয়েছে। কাদের স্বার্থে এগুলো করা হয়েছে। অদক্ষতা বা কিছুটা হলেও ঠিকাদারদের যোগসাজশে এসব করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এরকম ভুল আমরা না করি সেজন্য চেষ্টা থাকবে। এজন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করা দরকার। সরকারের অনেক জায়গায় বড় বড় দুর্নীতি আছে। এটা আমরা সবাই জানি। যেগুলো অনেক কম খরচে হতে পারত। কিন্তু উপযুক্ত মূল্যায়ন ও উপযুক্ত বাস্তবায়নের অভাবে খরচ বেড়ে গেছে। দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর প্রতি ইউনিট রাস্তা বা সড়ক বা বিভিন্ন অবকাঠামোতে যে ব্যয় হয়েছে তা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আমরা সেগুলো দেখছি। তবে সময় লাগবে।

প্রশ্ন : কোনো প্রকল্প বন্ধ করা হবে কি না?

ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ : বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক স্বার্থে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প চলমান আছে বলেই যে রাখতে হবে সেটি বড় কথা নয়। যেসব প্রকল্প এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে সেগুলোতে যদি মনে হয় অপচয়মূলক এবং রেখে লাভ নেই, তবে কিছুটা আর্থিক ক্ষতি সহ্য করে হলেও বাদ দিতে হবে। এজন্য দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। যেসব প্রকল্পের আসলেই গুরুত্ব নেই সেগুলোকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। নতুন প্রকল্প হলে এরপরই একনেকে উপস্থাপন করা হবে। চলমান প্রকল্পে আসলে কিছুটা খরচ হয়েছে বলেই যে পুরোটা শেষ করতে হবে সেটি বড় কথা নয়, পরে আরও কত খরচ হবে সেটি দেখতে হবে। যৌক্তিক অর্থনৈতিক বিবেচনা হলো কত খরচ করেছি সেটি বড় কথা না, বাকি কত খরচ করতে হবে এবং পুরো প্রকল্প থেকে কত সুবিধা পাব। কিছু খরচ হয়েছে বলেই আমার মানসিক চাপ থাকবে যে কেন খরচ করলাম, কিছু তো হলো না তা নয়। এটা অর্থনৈতিক যুক্তিতে খাটে না। এটাকে আমরা নির্জিত ব্যয় বলি।

প্রশ্ন : নতুন সরকারের একনেক কখন অনুষ্ঠিত হবে?

ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ : আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর এই সরকারের প্রথম একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় বৈঠকের পর আমি অনেক কিছুই বলতে পারব। কেননা সেখানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ই আলোচনা হবে। আমরা পর্যালোচনা না করে কোনো প্রকল্প একনেক উপস্থাপন করছি না।

প্রশ্ন : এই মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ কী?

ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ : জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) হিসাবে এমনিতেই সমস্যা আছে। জিডিপি বাড়লেই কি সব হয়ে গেল। বরং জিডিপির গুণগত মান অনেক বেশি দরকার। আমাদের প্রয়োজন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জিডিপি বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি ব্যয় করার চেয়ে যেটুকু ব্যয় করা হয় তা সাশ্রয় করে এমন প্রকল্প বা কৌশল গ্রহণ করা, যাতে অতিশিগগিরই কর্মসংস্থান বাড়ানো যায়। আমাদের কাছে জিডিপি বাড়ানোর চেয়ে কর্মসংস্থান বাড়ানো জরুরি। যদিও দুটি একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এরপরও কর্মসংস্থান বাড়ানোটা অনেক বেশি জরুরি।

প্রশ্ন : মেগা প্রকল্প বিষয়ে কিছু বলুন?

ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ : এর আগে প্রকল্প অনেক বেশি করতে চেয়েছি সেটা অনেকটা প্রেস্টিজ প্রকল্পের মতো। বড় বড় প্রকল্প, যাচাই-বাছাই না করে, অর্থায়নের দায় বিদেশি ঋণের দায় চিন্তা না করে গ্রহণ করা হয়েছে। ঠিকাদার বা বিভিন্ন স্বার্থগোষ্ঠীর জন্য এমনভাবে নেওয়া হয়েছে। এগুলো সুপরিকল্পিত বা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়নি। এগুলো নিয়ে কাজ করছি। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই মুহূর্তে বলার মতোও কিছু হয়নি।

সূত্র: যুগান্তর


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা, আহতরা এক লাখ - dainik shiksha অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা, আহতরা এক লাখ কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা ২৫ অক্টোবর - dainik shiksha কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা ২৫ অক্টোবর সভা মুলতবি, বাড়লো অধ্যাপক হওয়ার অপেক্ষা - dainik shiksha সভা মুলতবি, বাড়লো অধ্যাপক হওয়ার অপেক্ষা এসএসসির সনদ বিতরণ শুরু ২৫ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha এসএসসির সনদ বিতরণ শুরু ২৫ সেপ্টেম্বর জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে মার*ধর, হাসপাতালে মৃ*ত্যু - dainik shiksha জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে মার*ধর, হাসপাতালে মৃ*ত্যু শাহদীন মালিকের অপারগতা, সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রধান আলী রীয়াজ - dainik shiksha শাহদীন মালিকের অপারগতা, সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রধান আলী রীয়াজ জবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম - dainik shiksha জবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম প্রাথমিকের বৈষম্য দূর না হওয়ার বেদনা - dainik shiksha প্রাথমিকের বৈষম্য দূর না হওয়ার বেদনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054950714111328