রাজশাহী শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজপ্রতারণার ফাঁদে ৪২ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাজশাহী |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাজশাহী : রাজশাহী শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জিল্লার রহমান ও একই কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ৪২ জন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।

ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ক্ষতিপূরণসহ অন্য কোনো কলেজে মাইগ্রেশনের সুযোগ দিয়ে পুনরায় তাদের শিক্ষাজীবন ফিরে পাবার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে।

শনিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে ভূক্তভোগী ৪২ জন শিক্ষার্থী এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ওই কলেজের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মুন্না লিখিত বক্তব্যে বলেন, রাজশাহী বেসরকারি শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতারণার কারণে ৪২ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। আমরা শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজর শিক্ষার্থী, ২০২০-২১ সেশন এবং ২০২১-২২ সেশনে মেডিক্যাল কলেজের পত্রিকায় ভর্তি বিজ্ঞাপন দেখে কলেজে ভর্তি হই।

ওই বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত এবং রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। কিন্তু ভর্তির দুই বছর পরে আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারি মেডিক্যাল কলেজটি বিএমডিসির কর্তৃক অনুমোদন নেই। প্রতিষ্ঠানটি রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত নয়। এক কথায় কর্তৃপক্ষ তাদের ভুয়া ও চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ভর্তি করিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।

এ বিষয়ে সুরাহার জন্য শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জিল্লার রহমান এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনকে জানালে তারা বলেন কলেজটি অধিভুক্তি ও অনুমোদন রয়েছে।

আবারো তারা আশ্বাস দিয়ে আমাদের কাছ থেকে প্রতারণা যোগসাজশে কয়েক ধাপে উন্নয়ন ফি’র নাম করে ১২ থেকে সর্বোচ্চ ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়।

মেহেদী আরো অভিযোগ করেন, আমরা যখন তাদেরকে দেখি, একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান তখন আমাদের বিশ্বাস আরো দৃঢ় হয় তাদের কথায়। কিন্তু সাবেক সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন যে, শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের দায়িত্ব থেকে তিনি এর মধ্যে অব্যাহতি নিয়েছেন। এই কথা বলে তিনি দায়মুক্ত হতে চান।

এরপর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের কাছে গেলে তিনি বলেন, কতৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে না, চাইলে শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে মামলাও করতে পারেন। তার কোনো আপত্তি নেই। এরপর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহূর্তের মধ্যে বিনা নোটিশে শিক্ষার্থীদেরকে হোস্টেল থেকে বের করে দেন।

তিনি বলেন, হোস্টেল ত্যাগ করতে না পারলে তোমাদের জান ও মালের নিরাপত্তা কেউ দেবে না। এ বিষয়ে আমরা চন্দ্রিমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি যার তদন্ত চলমান। এখন আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ অনিশ্চিত।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতারক মনিরুজ্জামান স্বাধীন ও জিল্লার রহমানের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে আর্থিক, মানসিক এবং সার্বিকভাবে বিপর্যন্ত। আমাদের ৪২ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পথে।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আদালতে পৃথক পৃথকভাবে ২১টি মামলা দায়েরসহ রাজশাহী জেলা প্রশাসক, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক, সচিব স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, মন্ত্রী সাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর কাছে চিঠি প্রদানের মাধ্যমে অবগত করে। তারা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করলেও এখন পর্যন্ত কোন সুরাহা পায়নি।

শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ সকল শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের নিশ্চয়তা নিরাপত্তা সকল কিছু দিতে ব্যর্থ। তার কাছে শিক্ষার্থীরা বেশি নিরাপত্তাহীন। মেডিক্যাল কলেজের সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষাজীবন রক্ষার্থে অতি দ্রুত নবায়ন যুক্ত মেডিক্যাল মাইগ্রেশনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ - dainik shiksha অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা - dainik shiksha সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে - dainik shiksha শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ - dainik shiksha এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে - dainik shiksha যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060660839080811