প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে। প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় হবে। শিক্ষার আলো প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে দেশ। এছাড়াও একটি উন্নত ও সুন্দর সমাজ গড়তে ছাত্র-শিক্ষকসহ সকল শ্রেণির মানুষকে আহ্বান জানিয়েছে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের সাফল্য উদযাপনে শনিবার (১৯ জানুয়ারি) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশে একথা বলেন তিনি।

নেতাকর্মীদের সতর্ক করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “বিজয় পাওয়া যত কঠিন, সেই বিজয় রক্ষা করে জনগণের সেবা করা আরো কঠিন কাজ। সেই কঠিন দায়িত্ব আমরা পেয়েছি। সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে সেটা সকলকে মনে করিয়ে দিতে চাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বঙ্গবন্ধু এই দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। জীবন দিয়েছেন আমার মা, আমার ভাইয়েরা। এই দেশের অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে।”
সত্যিকার অর্থে সেই ভাগ্য পরিবর্তন যাতে ঘটে সেজন্য দল-মত নির্বিশেষে সবার জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন যেমন বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এবং যেন বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে পারে সেভাবে আমরা আমাদের দেশকে গড়ে তুলতে চাই। সে জন্য যা যা করা দরকার করব। প্রতিটি গ্রাম শহরের সকল নাগরিক সুবিধা পাবে। তৃণমূলে মানুষের জীবন উন্নত করব। শিক্ষার আলো প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে। প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় হবে, প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে।’ ছাত্র-শিক্ষকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে আহ্বান জানাই, ‘আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। যাতে তারা একটি উন্নত ও সুন্দর সমাজ পায়।’

নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছেন, আর যারা ভোট দেননি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বাস করে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়েছে। এই ভোটের সম্মান আমি রক্ষা করব। “বাংলাদেশের মানুষের ভোটের মর্যাদা রক্ষা করে তাদের জীবনমান উন্নত করবার জন্য প্রয়োজনে আমি আমার বুকের রক্ত দিতে প্রস্তুত। সেই ওয়াদাই আজকে করে যেতে চাই।”

২০১৬ খ্রিস্টাব্দে গুলশানের হলি আর্টিজান ক্যাফেতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার পর থেকেই দেশজুড়ে জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযান চালিয়ে আসছিল সরকার। এরমধ্যে গত বছর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শুরু হয় মাদকবিরোধী অভিযান।

নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলের পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তার নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের মন্ত্রীরাও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে দেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা পূরণ করা আমাদের কর্তব্য।”

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৫৭টি আসনে জয় নিয়ে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। ভোটের ১৯ দিন পর এই বিজয় উৎসব করল দলটি।

বেলা ৩টার পরপরই শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে স্লোগানে স্লেগানে তাকে স্বাগত জানান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী সমর্থকরা।

উদ্যানের ভেতরে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি করা হয় ‘বিজয় মঞ্চ’, তার পেছনের ব্যানার সাজানো হয় দলের এবারের ইশতেহারের মলাটের রঙে।

বৈঠাসহ ছোট বড় ৪০টিরও বেশি নৌকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ফেস্টুনে সাজানো হয় সমাবেশ মাঠ।

জনসভার কারণে সকাল ১১টা থেকে শাহবাগের রূপসী বাংলা সিগন্যাল, কাঁটাবন মার্কেট মোড়, নীলক্ষেত মোড়, চানখাঁরপুল, জিপিও ও মৎস্য ভবন মোড় থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

‘জয় বাংলা’ স্লোগানের সঙ্গে ঢাক-ঢোলের বাদ্যে মুখর এই নেতা-কর্মীদের দুপুরে মাতিয়ে তোলেন জনপ্রিয় সব সঙ্গীত শিল্পী।

মঞ্চে শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন, ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, দীপু মনি।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এইচ টি ইমামসহ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের নেতা ও মন্ত্রিপরিষদের বেশিরভাগ সদস্য মঞ্চে ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির - dainik shiksha অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0076301097869873