প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রাথমিকের ১১৭ পদ সংরক্ষণের নির্দেশ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮ এবং ২০২০ এ চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং বিধিমালা অনুযায়ী ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেয়া কেন অবৈধ হবে না ও ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। 

একইসঙ্গে রিটকারীদের তাদের স্ব স্ব জেলায় ১১৭টি সহকারী শিক্ষকের পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১১ মার্চ) দেশের বিভিন্ন জেলার ১১৭ জন প্রার্থীর দায়ের করা দুটি রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার এবং বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, রিটকারীরা অত্যন্ত মেধাবী শারীরিক প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। ১১৭ জনের মধ্যে প্রায় অনেকেই দেশের সবচেয়ে স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। তাদের অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর মতো স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। তারা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮ এবং ২০২০ এর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। পরে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সফলভাবে উত্তীর্ণ হন এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু উক্ত নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হলে দেখা যায় সেখানে কোনো প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সুযোগ প্রদান করা হয়নি। অথচ, সংস্থাপন মন্ত্রণালয় (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) কর্তৃক জারিকৃত ১৭/০৩/১৯৯৭ খ্রি. তারিখের পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির সহকারী শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০% পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করার বিধান রয়েছে এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ এর ৮ এর ২ বিধিতে বলা হয়েছে ‌‘উপ-বিধি (২) এর দফা (গ) তে উল্লেখিত নারী, পোষ্য ও পুরুষ কোটা পূরণের ক্ষেত্রে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো বিধি বা সরকারি সিদ্ধান্তে কোনো বিশেষ শ্রেণির কোটা নির্ধারিত থাকলে উক্ত কোটা সংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ করিতে হইবে’ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর ধারা ৩৫ এর ১ এ বলা হয়েছে ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যোগ্যতা থাক সত্ত্বেও, প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী, উপযোগী কোনো কর্মে নিযুক্ত হতে কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তাহার প্রতি বৈষম্য করা বা তাহাকে বাধাগ্রস্ত করা যাইবে না’ এবং

আমাদের দেশের সংবিধান এর অনুচ্ছেদ ২৮ এর ৪ এ উল্লেখ্য আছে যে ‘নাথিং ইন দিস আর্টিকেল শ্যাল প্রিভেন্ট দ্যা স্টেট ফ্রম মেকিং স্পেশাল প্রিভিশন ইন ফেভার অফ ওমেন অর চিলড্রেন অর ফর দ্যা অ্যাডভান্সমেন্ট অফ অ্যানি ব্যাকওয়ার্ড সেকশন অফ সিটিজেনস’, কিন্তু বিধি মোতাবেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার বৈধ অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও উপরিউক্ত সকল আইনকানুন অবজ্ঞা করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮ এবং ২০২০ চূড়ান্ত ফলাফলে কোনো প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সুযোগ প্রদান না করায় পিটিশনারদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন হওয়ায় রিট দায়ের করা হয়।

রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং পরিচালক (পলিসি এন্ড অপারেশন)-কে বিবাদী করা হয়।

রিটকারীগণ হলেন (বিভিন্ন জেলার) প্রথম রিটের (১) মো. দুলাল হোসেন, (২) মো. আনিচুর রহমান, (৩) মো. রাফাত আল ফয়সাল, (৪) মেসবাহ উদ্দিন এবং (৫) নাসির উদ্দিন এবং দ্বিতীয় রিটের (১) মো. শামীম রেজা, (২) মো. মনজুরুল ইসলাম, (৩) মো. ইদ্রিস আলী, (৪) মো. আইউব আলী এবং (৫) বেলাল হোসেন সহ সর্বমোট ১১৭ জন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি : শিক্ষক নিয়োগে আবেদন ২৩ হাজারের বেশি - dainik shiksha পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি : শিক্ষক নিয়োগে আবেদন ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী মূল্যায়ন: ৬৫ শতাংশ লিখিত, ৩৫ কার্যক্রমভিত্তিক - dainik shiksha শিক্ষার্থী মূল্যায়ন: ৬৫ শতাংশ লিখিত, ৩৫ কার্যক্রমভিত্তিক একাদশে ভর্তি আবেদন ২৬ মে থেকে ১১ জুন - dainik shiksha একাদশে ভর্তি আবেদন ২৬ মে থেকে ১১ জুন ইবতেদায়ি মাদরাসার হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে অধিদপ্তর - dainik shiksha ইবতেদায়ি মাদরাসার হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে অধিদপ্তর ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে - dainik shiksha একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051720142364502