প্রতিবন্ধী স্কুলের জমি দখল করায় হাজী সেলিম এখন বাক-প্রতিবন্ধী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রতিবন্ধীদের সম্পদ দখল করায় পুরান ঢাকার সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম আজ নিজেও বাক-প্রতিবন্ধী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার সভাপতি শাহাদাৎ আলম হারু চৌধুরী। 

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

হারু চৌধুরী বলেন, লালবাগে ঢাকা বধির হাই স্কুলের যে জমি রয়েছে সেটি হাজি সেলিম দখল করে রেখেছেন। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও তিনি এ সম্পদ ফিরিয়ে দিচ্ছেন না
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল, এক মাসের মাথায় বধির শিক্ষার্থীদের শিক্ষার জন্য এই জায়গাটি তিনি ছেড়ে দেবেন।

জেলা প্রশাসকদেরকে জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। প্রতিবন্ধীদের সম্পদ দখল করায় হাজি সেলিম আজ আর কথা বলতে পারছেন না। এখান থেকেই শিক্ষা নেওয়া উচিৎ- আমরা যদি প্রতিবন্ধীদের ঠকাই, সৃষ্টিকর্তা আমাদের এ জমিনেই শিক্ষা দেবেন। 

হারু অভিযোগ করে বলেন, বিজয়নগর সংকীর্ণ জায়গায় তারা (প্রতিবন্ধীরা) লেখাপড়া করছে। সেখানে একটি ছয়তলা ভবন শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, হাজি সেলিম এই জমিটা দখল করে রেখেছেন। তিনি বধির শিশুদের জন্য বরাদ্দ এই জায়গাটি দিচ্ছেন না।

ছবি : বুলবুল আহমেদ

বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস বলেন, ঢাকা সরকারি বধির হাইস্কুলের নিজস্ব সম্পত্তি সম্পূর্ণ অন্যায়-বেআইনি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পত্তি দখল করে আছেন হাজী সেলিম। ঢাকা জেলা প্রশাসককে এ ব্যাপারে জানানো হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

মানববন্ধনে মানবিক দিক বিবেচনায় সংস্থার সার্বিক উন্নয়নে ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উচ্চ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও চিকিৎসা মনের স্বার্থে জরুরিভিত্তিতে দেশের বাক প্রতিবন্ধীদের সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা।

উল্লেখ্য, দেশের সুবিধা বঞ্চিত শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৬৬ সাল থেকে সংস্থার প্রধান শিক্ষা প্রকল্প হিসেবে ঢাকা বধির স্কুল স্থাপিত হয়। স্কুলটি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে।

ঢাকা বধির হাই স্কুলের সম্প্রসারণ ও বৃহৎ পরিসরে স্কুল স্থাপনের উদ্দেশ্যে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের বিনিময়ে বিগত ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা জেলার লালবাগ থানাধীন লালবাগ মৌজার এস এস-১ নম্বর খতিয়ান ভুক্ত সাবেক ২০৬৫ নম্বর দাগের এক একর (আংশিক) জায়গা ঢাকা বধির হাই স্কুলের নামে বরাদ্দ করা হয়।   ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে লিজ দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে ১১ বছরের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। যার নামজারি ও ভূমি উন্নয়ন কর ১৪২৬ বাংলা সন পর্যন্ত পরিশোধিত আছে। লিজকৃত জমি পুনরায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবরে দানপত্র দলিল মূল্যে ন্যস্ত করায় স্কুলটি ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয়করণ করা হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027639865875244