প্রতিমন্ত্রীর ডিও লেটারে মেধার বাইরে ভর্তি!

রাজশাহী প্রতিনিধি |

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রকৃত মেধাবীদের বাদ দিয়ে মেধা তালিকার বাইরে ৫২ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৪০ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা ঘুষ নিয়ে এদের ভর্তি করিয়েছেন। তবে প্রধান শিক্ষক বলেন, তিনি রাজনৈতিক চাপে পড়ে এ কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন।

প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ’পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ডিও লেটার দেওয়ার কারণে ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে মেধা তালিকার বাইরে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় থানা আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ প্রভাবশালীদের চাপে অন্য আরও কয়েকজনকে ভর্তি করা হয়েছে। এটা অনিয়ম হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই অনিয়ম হয়েছে। তবে আমি তো আর ইচ্ছে করে ভর্তি করিনি।  তিনি ডিও দিয়ে চাপ না দিলে তো আমি ভর্তি নিতাম না। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ডিও দেওয়ার পর তার এপিএস সিরাজ আমাকে বারবার চাপ দিয়েছেন ভর্তি নেওয়ার জন্য। আমি বলেছিলাম, মাত্র তিনটি সিট ফাঁকা আছে। তবুও আমাকে চাপ দিতে থাকেন। আমি সরকারি চাকরি করে মন্ত্রীর ডিওর বিরুদ্ধে কীভাবে যাব? তাই ভর্তি নিয়েছি।’

বিদেশে থাকার কারণে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার এপিএস সিরাজুল ইসলাম বলেন, ’রাজনীতির কারণে তদবির করতেই হয়। তবে কোনো চাপ দেওয়া হয়নি। স্যার ডিওতে লিখেছেন, সিট ফাঁকা থাকলে ভর্তি নেওয়ার জন্য। প্রধান শিক্ষক আগ্রহী হয়েই ভর্তি নিয়েছেন। এখন জামায়াতের তিনজন শিক্ষক ইস্যু তৈরি করার জন্য ক্লাস বর্জনে শিক্ষার্থীদের উস্কে দিচ্ছেন।’


এদিকে মেধা তালিকার বাইরে থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে স্কুলে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তারা অর্থ নিয়ে ভর্তিবাণিজ্য বন্ধ করা এবং প্রকৃত মেধাবীদের ভর্তি করার দাবি জানায়। এ সময় প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরাই স্কুল মাঠে জড়ো হয়ে স্লোগান ও ফেস্টুন হাতে প্রতিবাদ জানাতে থাকে।

দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, এ বছর মেধা তালিকার বাইরে থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করায় ক্লাসের ধারণক্ষমতা পার হয়ে গেছে। আরেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, 'এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় স্কুলে শিক্ষক কম। তার ওপর আবার টাকার বিনিময়ে প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। খসরু মাহমুদ নামে এক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে জান্নাত তৃষা জিপিএ ৫ পেয়েও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারেনি। সে আমাকে বলেছে, স্যারকে টাকা দিয়ে আমার বান্ধবী স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তুমি পারোনি কেন আব্বু? তোমার কাছে কি টাকা ছিল না- মেয়ের এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারছি না। এখন মেয়ের মুখের দিকেও তাকাতে পারছি না।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032999515533447