প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী : পনেরো বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। হাঁটি হাঁটি পা পা করে এ বিশ্ববিদ্যালয় ১৫-তে পা রাখছে। এই শুভলগ্নে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি রইল অনেক অনেক ভালোবাসা। বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, লড়াই ও সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত পুরান ঢাকার খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আত্মপ্রকাশ ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ঘটলেও এটি বিশ্ববিদ্যালয় হয় ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে। শুরু থেকে বর্তমান অবধি শিক্ষা বিস্তারে নিরবচ্ছিন্নভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এ প্রতিষ্ঠান। একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে শিক্ষা ও গবেষণায় দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপিঠে পরিণত হয়েছে। রোববার (২০ অক্টোবর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, বুড়িগঙ্গার কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটি উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও প্রতিষ্ঠার দেড় দশকে এর অবকাঠামোগত তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। সবকিছু রয়ে গেছে মান্ধাতার আমলের মতো। ভাঙাচোরা চেয়ার-টেবিল, অপর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, গবেষণা সামগ্রীর অভাব, রাজনীতির লালফিতার দৌরাত্ম্য, আবাসন সংকটসহ নানা প্রতিকূলতা এখানে বিদ্যমান। আসলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলোর সমাধানে দেয়া হচ্ছে না পর্যাপ্ত দৃষ্টি। দেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বমোট ৪৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে বহুবিধ সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে, আমরা সেখানে সবদিক থেকে উপেক্ষিত।

আমাদের কোনো কিছু পেতে হলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে, পুলিশের লাঠিচার্জ, কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাজপথে নামতে হয়- কখনও তাঁতিবাজার মোড়, কখনও প্রেস ক্লাব, কখনোবা শিক্ষাভবনের সামনে। তারপরও ওপরওয়ালাদের টনক নড়ে না। দায়সারা গোছের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের বিদায় করে দেয়া হয়। একবুক হতাশা আর তীব্র অভিমান নিয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হয় আমাদের। আমরা বারবার সাহস সঞ্চার করে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য সোচ্চার হই। কখনও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায় বলি, ‘ঈশ্বর থাকেন ঐ ভদ্রপল্লীতে, এখানে তার দেখামেলা ভার।’

সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাগ্যাকাশে আশার আলো জ্বলতে শুরু করেছে। লাগাতার সংগ্রামের ফসল হিসেবে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কৃপায় শর্তসাপেক্ষে আমরা ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জে প্রায় ২০০ একর জায়গা বরাদ্দ পেয়েছি। নতুন ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের কাজ এখনও শুরু হয়নি। কবে নাগাদ শুরু ও শেষ হবে তা একমাত্র ঈশ্বরই জানেন। নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শেষ হলে শিক্ষার্থীদের বর্তমান সমস্যা বহুলাংশে লাঘব হবে এবং অগ্রগতির বহমান ধারা দ্রুত থেকে দ্রুততর হবে।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তার সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে একদিন বিশ্বের রথী-মহারথী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতারে নিজের নাম লেখাবে। দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে টকশোর জমকালো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে আমাদের এ ম্রিয়মাণ ক্যাম্পাসটি। শত শত ক্যামেরার ঝলকানিতে লাস্যময়ী প্রেমিকার মতো সহাস্যে ভ্রু-কুঁচকে নিন্দুকদের উপেক্ষার জবাব দেবে। অধীর আগ্রহে সেই দিনটির অপেক্ষায় রইলাম।

আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন : শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057640075683594