একাদশে ভর্তির আবেদনের বাইরে রয়ে গেল প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ছিল আবেদনের শেষ সময়। এখন পর্যন্ত মোট আবেদনকারী ১৩ লাখ ৫ হাজার জন।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯ জন আবেদন করেছে। অনলাইনে আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৭৭ হাজার। আর এসএমএসে আবেদন করেছে তিন লাখ ৫০ হাজার জন। সব মিলিয়ে আবেদনের সংখ্যা ৬২ লাখ ১৩ হাজার। ফলে গড়ে একজন শিক্ষার্থী পাঁচটি কলেজে আবেদন করেছে। তবে এবার সর্বোচ্চ ১০ কলেজে আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছিল।
আন্ত শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের বেশি আবেদনের সুযোগ থাকলেও তারা প্রতিবছর কমসংখ্যক কলেজ বেছে নেয়। এতে দেখা যায়, অনেককেই প্রথম পর্যায়ে কলেজ নির্বাচন করে দেওয়ার সুযোগ থাকে না। কারণ মেধাবীদের সবার পছন্দ প্রায় একই। অথচ নামিদামি কলেজে আসন খুবই কম। তাই এবার ১০ কলেজে আবেদন করার জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবারও শিক্ষার্থীরা গড়ে পাঁচ কলেজে আবেদন করেছে। ফলে প্রথম পর্যায়েই সবার কলেজ নির্বাচিত করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে বোর্ড কর্মকর্তারা।
জানা যায়, এবারের আবেদন থেকে এরই মধ্যে শিক্ষা বোর্ডগুলোর আয় হয়েছে ১৮ কোটি ৬২ লাখ ১৭ হাজার ৮০ টাকা। আর নির্বাচিত হওয়ার পর কলেজ নিশ্চয়ন বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীকে ১৮৫ টাকা করে ফি দিতে হবে। এতে বোর্ডগুলোকে আরো দিতে হবে প্রায় ২৪ কোটি টাকা। ফলে ভর্তি ও নিশ্চয়ন থেকেই আয় হবে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।
জানা যায়, অনলাইন আবেদনে ফি লেগেছে ১৫০ টাকা। আর এসএমএসে প্রতি কলেজের জন্য ফি লেগেছে ১২০ টাকা করে। ফলে অনলাইনে মাত্র ১৫০ টাকায় ১০ কলেজে আবেদন করা গেলেও এসএমএসে ১০ কলেজে আবেদনের জন্য লেগেছে ১২০০ টাকা। অনেক অভিভাবকই এসএমএস আবেদনে এত টাকা লাগায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ গ্রামগঞ্জে যেখানে ইন্টারনেট সুবিধা অপ্রতুল সেখানকার শিক্ষার্থীরা এসএমএসেই বেশি আবেদন করেছে। অনলাইনের তুলনায় এবার এসএমএসেও আবেদনের সংখ্যা কম নয়।
তবে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, ভর্তি আবেদনে বড় অঙ্কের টাকা আয় হলেও বেশির ভাগ টাকা কলেজ কর্তৃপক্ষকেই দেওয়া হয়। কারিগরি সহায়তার জন্য আবেদন ফির ১০ শতাংশ দেওয়া হয় বুয়েট কর্তৃপক্ষকে। আর বোর্ডগুলো নেয় ৫ শতাংশ, টেলিটক নেয় ৫ শতাংশ।
এসব বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. আশফাকুস সালেহীন বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের এসএমএসের চেয়ে অনলাইনে আবেদনেই বেশি উৎসাহ দিই। এতে খরচ কম লাগে। আর যে টাকা আয় হয় এর বেশির ভাগই কলেজগুলোকে দিয়ে দেওয়া হয়। ’
জানা যায়, যেসব শিক্ষার্থীর পুনর্নিরীক্ষণে ফল পরিবর্তন হবে, তারা ৩০ ও ৩১ মে আবারও তাদের আবেদনে পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবে। তবে শিক্ষার্থীদের মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজ নির্বাচন করে দেবে শিক্ষা বোর্ডগুলো। ৫ জুন প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। ৬ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে ১৮৫ টাকা ফির বিনিময়ে কলেজ নিশ্চয়ন করতে হবে। এরপর মাইগ্রেশনের আবেদন এবং নতুন আবেদন করা যাবে ৯ থেকে ১০ জুন। ১৩ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের ফল দেওয়া হবে। তাদের ১৪ ও ১৫ জুন কলেজ নিশ্চয়ন করতে হবে। এরপর আবার মাইগ্রেশন ও নতুন আবেদন করা যাবে ১৬ ও ১৭ জুন। তৃতীয় পর্যায়ে ফল প্রকাশ করা হবে ১৮ জুন।