দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : মাধ্যমিকের প্রথম দিনেই ইন্টারনেটে প্রশ্ন বেরিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠলো পশ্চিমবঙ্গে। শুক্রবার বাংলা পরীক্ষা ছিলো। পরীক্ষা শেষের আগেই ফোনে ফোনে ঘুরতে দেখা যায় প্রশ্নপত্র। কেউ বা কারা ছবি তুলে ওই প্রশ্ন সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। যে প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়েছে, পরীক্ষা শেষের পর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া আসল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হয়েছে। প্রশ্ন হুবহু মিলে গেছে। অর্থাৎ, আসল প্রশ্নপত্রের ছবিই কেউ তুলে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই ঘটনায় পরীক্ষা শেষের এক ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করা গেছে বলে জানিয়েছে পর্ষদ। মালদহের দুই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
প্রতি বছর মাধ্যমিকের প্রশ্ন পরীক্ষার আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। সেই সম্ভাবনা এড়াতে এ বছর বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পাতা হয়েছিল বিশেষ ‘ফাঁদ’। প্রশ্নপত্রের মধ্যেই সেই ফাঁদ লুকিয়ে ছিলো।
প্রশ্নপত্রগুলো এ বছর এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে কেউ তার ছবি তুললে তাঁকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। প্রশ্নপত্রে প্রত্যেক প্রশ্নের পাশে একটি করে কিউআর কোড ছেপেছিল পর্ষদ। কেউ ছবি তুললে সেই কিউআর কোডের সূত্রেই ছবিটি কোথা থেকে তোলা হয়েছে, তা চিহ্নিত করা সম্ভব বলে জানিয়েছিল পর্ষদ। রাজ্যের যে কোনো প্রান্ত থেকেই প্রশ্নের ছবি তোলা হোক না কেন, পর্ষদ তা জানতে পারবে বলে দাবি করেছিল। সেই ফাঁদেই পা দিয়েছেন মালদহের দুই পরীক্ষার্থী।
পর্ষদের নির্দেশ অনুযায়ী, শুক্রবার প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রশ্নের ছবি তোলা নিষিদ্ধ। যদি কেউ ছবি তোলেন, তবে তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও জানিয়ে দেওয়ার কথা পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের। সেই মতোই পর্ষদ থেকে নির্দেশিকা এসেছিল। কলকাতার বেশ কয়েকটি স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষক, শিক্ষিকারা পরীক্ষার্থীদের পর্ষদের নির্দেশিকা জানিয়ে পরীক্ষা শুরুর আগেই সতর্ক করেছেন।
গতকাল মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষা শেষ হয় বেলা ১টায়। তারপর পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাজমাধ্যমে বেরিয়ে যাওয়ার যে ঘটনা ঘটে, এক ঘণ্টার মধ্যেই তাতে দোষীদের চিহ্নিত করা গেছে। একে পর্ষদ নিজেদের সাফল্য হিসাবেই দেখছে। রামানুজ বলেন, মালদহের দুই পরীক্ষার্থী এই কাজ করেছেন। ইতোমধ্যেই তাঁদের শনাক্ত করা গেছে। তাঁদের পরীক্ষা সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গেছে। মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশনই বাতিল করে দিয়েছে পর্ষদ।
পশ্চিমবঙ্গে এ বছর প্রায় ১০ লাখ পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক দিচ্ছেন। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় বেশ কিছুটা এগিয়ে আনা হয়েছে। এ বছর পরীক্ষা শুরু হচ্ছে প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে। ৯টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে প্রশ্নপত্র পেয়ে যাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা। প্রশ্নপত্রে কিউআর কোড বসানোর পদ্ধতি এ বছর প্রথম চালু করা হয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার