প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির বই আসেনি ফেনীর চার উপজেলায়

ফেনী প্রতিনিধি |

বছরের প্রথম দিন সারা দেশে বই উৎসব হলেও ফেনীর  বিভিন্ন স্থানে সব শ্রেণির বই হাতে না পাওয়ায় হতাশ হয়েছে শিক্ষার্থীরা। জেলার চার উপজেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে একটি বইও পায়নি শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সকাল পর্যন্ত জেলায় প্রাথমিক স্তরের বাংলা ভার্সনে ৪৭ শতাংশ বই পেয়েছে। প্রাথমিক স্তরের ইংলিশ ভার্সনে পায়নি কোনো বই। তবে প্রাক-প্রাথমিক স্তরে সকল বই পেয়েছে। গতকাল ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, জেলায় প্রাথমিক স্তর বাংলা ভার্সনে সরকারি ও কিন্ডারগার্টেন মিলিয়ে ৮৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। জেলায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৬০ জন। বইয়ের চাহিদা ৬ লাখ ২০ হাজার তিনটি। মোট প্রাপ্ত বই ২ লাখ ৯০ হাজার ৩১৭। বই প্রাপ্তির শতকরা হার ৪৬ শতাংশ ৩০ শতাংশ।

ইংলিশ ভার্সনে পাঁচটি বিদ্যালয় ৬৪৫টি শিক্ষার্থীর বিপরীতে ২ হাজার ৯ শ’ ৭০টি বইয়ের চাহিদা থাকলেও একটি বইও পাওয়া যায়নি। তবে জেলায় প্রাক প্রাথমিক স্তরে ২১ হাজার ৪৬ শিক্ষার্থীর বিপরীতে সকল বই ও খাতা পেয়েছে। এদিকে ফেনীর ছয় উপজেলার মধ্যে চার উপজেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে একটি বইও আসেনি। ফেনী সদর ও দাগনভূঞা উপজেলায় বরাদ্দের অনুপাতে বই এসেছে প্রায় ৬৭ শতাংশ। তবে সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির তিনটি বইয়ের কোনোটি আসেনি। ফলে এ সকল উপজেলার শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে বই না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে গেছে।  অপরদিকে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বছরে প্রথম দিন সকল বই হাতে পায়নি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসে চাহিদার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বই পাওয়া গেছে। প্রাক প্রাথমিক ছাড়া প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোথাও ১০০ শতাংশ বই পাওয়া যায়নি। সোনাগাজী উপজেলার আর এম হাট কে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরীয়ত উল্লাহ জানান, তার বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ৪০ জন ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৫৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এই দুই শ্রেণির ৯৫ জন শিক্ষার্থী কোনো বই পায়নি। সোনাগাজী মাদ্রাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আদিল জানায়, সকালে স্কুলে আসলেও তাকে নতুন বই দেয়া হয়নি। শিক্ষকরা বলেছে বই আসলে পরে দেয়া হবে। এ সময়ে ওই শিক্ষার্থী মন খারাপ করে বাড়ি চলে যায়। তার মতো একই অবস্থা উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি শিক্ষার্থীদের।

এদিকে পরশুরাম উপজেলার শালধর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিন জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোনো বই সরবরাহ করা হয়নি। তাদের জানানো হয়েছে বইবাহী ট্রাক এখনো ফেনী এসে পৌঁছেনি। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই উপজেলা শিক্ষা অফিসে আসলেই তাদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে। ফুলগাজী উপজেলার বন্ধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইলিয়াস জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি ছাড়া তৃতীয় চতুর্থ ও পঞ্চম এবং প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করা হয়েছে। আগামীকাল প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই বিতরণ করা হতে পারে। ছাগলনাইয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, তার উপজেলায় গতকাল রোববার প্রথম শ্রেণির একটি ও দ্বিতীয় শ্রেণির দুটি বই এসেছে। বইগুলো আজ উপজেলা পর্যায়ের স্কুলগুলোতে বিতরণ করা হবে। আজ অথবা আগামীকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা বই হাতে পাবে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে - dainik shiksha একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের - dainik shiksha ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম - dainik shiksha থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান - dainik shiksha প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065150260925293