প্রথম শ্রেণিতে পরীক্ষা নেই, প্রাক-প্রাথমিকে মূল্যায়ন নেই

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষাথীদের কোনো মূল্যায়ন বা পরীক্ষা হবে না। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে পুরো মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে (ধারাবাহিকভাবে)। 

আর আগের শিক্ষাক্রমের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে করোনা পরিস্থিতির আগের নিয়মে। আগামী ১৪ মে থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম প্রান্তিক বা অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ পরীক্ষার জন্য রুটিন প্রণয়ন করবেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা। বিদ্যালয় বা ক্লাস্টারভিত্তিক প্রশ্ন তৈরি করে পরীক্ষা নেয়া হবে। কম্পিউটার কম্পোজ করা প্রশ্ন ফটোকপি করে পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের দিতে হবে। তবে পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ফি নেয়া যাবে না।

প্রথম প্রান্তিক পরীক্ষা শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে এসব নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ার পর থেকেই খুদে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষকরা ধোঁয়াশায় ছিলেন। অবশেষে সে ধোঁয়াশা কাটলো। 

মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন নির্দেশনা জারি করা হয়। এদিন সভা করেও মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কয়েকজন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অধিদপ্তরের পলিসি ও অপারেশন শাখার পরিচালক মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির কোনো মূল্যায়ন বা পরীক্ষা গ্রহণ করা যাবে না। পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম ২০২১ (প্রাথমিক স্তর) অনুযায়ী ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে শতভাগ ধারাবাহিক মূল্যায়ন করতে হবে। প্রথম শ্রেণিতে কোনো প্রান্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে কোভিড পরিস্থিতির আগের নিয়মানুযায়ী মূল্যায়ন সম্পন্ন করতে হবে।

প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন নিয়ে বলা হয়েছে, প্রাথমিক স্তরের শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক ও সামষ্টিক মূল্যায়নের একটি নির্দেশিকা প্রাথমিক স্তরের প্রথম শ্রেণির জন্য রচিত সব শিক্ষক সহায়িকা সঙ্গে সংযুক্ত করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে ওয়েব সাইটে (www.nctb.gov.bd) আপলোড করা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষকদের মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা ও তথ্য সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি বিষয়ের উপর অর্জন উপযোগী যোগ্যতা ও শিখনফলের নম্বর উল্লেখ করে শিক্ষক ডায়েরি-১ এবং শিক্ষক ডায়েরি-২ নামে ২টি ওয়ার্ড ও পিডিএফ ফাইল আপলোড করা আছে। সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা ওই ফাইল ডাউনলোড করে নির্দেশনা অনুযায়ী মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন এবং প্রতি প্রান্তিকে শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতির প্রতিবেদন দিতে পারবেন।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্ষপঞ্জিতে উল্লেখ করা মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রান্তিকের মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার রুটিন প্রণয়ন করবেন। সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের তত্ত্বাবধানে বিষয় শিক্ষকের মাধ্যমে জ্ঞান, অনুধাবন ও প্রয়োগমূলক শিখনক্ষেত্র বিবেচনায় বিদ্যালয় বা ক্লাস্টারভিত্তিক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে। মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের কাছে থেকে ফি নেয়া যাবে না। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী প্রশ্নপত্র কম্পিউটারে কম্পোজ করে ফটোকপি করতে হবে। প্রশ্নপত্র ফটোকপি ও উত্তরপত্রসহ আনুষাঙ্গিক ব্যয় বিদ্যালয়ের আনুষাঙ্গিক খাত বা স্লিপ ফান্ড থেকে নির্বাহ করতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।

জানতে চাইলে একজন শিক্ষা কর্মকর্তা মঙ্গলবার রাতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মূল্যয়ন নিয়ে মঙ্গলবারই সভা হয়েছে। এতে মূল্যায়ন নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিকের পরীক্ষা হবে না। প্রথম শ্রেণিতে ধারাবাহিক মূল্যায়ন। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে করোনা পরিস্থিতির আগের যে নিয়মে পরীক্ষা হতো সে নিয়মে পরীক্ষা হবে। ১৪ মে থেকে পরীক্ষা শুরুর কথা আছে। তবে কোনো কোনো উপজেলায় দুই-একদিন পরেও পরীক্ষা শুরু হতে পারে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি - dainik shiksha জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি - dainik shiksha রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন - dainik shiksha চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য - dainik shiksha দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের - dainik shiksha এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023279190063477