সরকারি কলেজ ও মাদ্রাসায় প্রদর্শক নিয়োগের ফল তৈরিতে ফেরে নয়ছয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন বর্তমান ও একজন সাবেক উপ-পরিচালক অবাঞ্ছিতভাবে এই ফল তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন। সাবেক একজন মহাপরিচালকের দেয়া তালিকা প্রধান্য পেয়েছে ফল তৈরিতে এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
তারা বলেছেন, অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাধারণ প্রশাসন মো: শফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী নিয়োগ কমিটির সহায়ক হিসেবে ছিলেন কিন্তু কী কারণে তাকে বাদ দিয়ে উপ-পরিচালক মো: মেজবাহউদ্দিনকে দায়িত্ব দেয়া হলো তা বোধগম্য নয়। গত কয়েকদিন যাবত কক্ষ বন্ধ করে একজন পরিচালক ও একজন উপপরিচালক মিলে এই ২৪৫ জন প্রদর্শকের ফল প্রস্তুত করে পেনড্রাইভে করে মহাপরিচালকের হাতে দিয়েছেন বৃহস্পতিবার। অভিযোগকারীদের মতে সংখ্যাটি প্রায় তিনশ।
আইবিএর মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা নিলেও নয়ছয় হয়েছে কোটা বন্টন, মৌখিকের নম্বরসহ বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয়ে। যা শুধুই পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) এবং মেজবাহউদ্দিন এবং সাবেক উপ-পরিচালক ওসমান ভুইয়া জানেন। এছাড়াও কামাল উদ্দিন হায়দারকেও দেখা গেছে মহাপরিচালকে কক্ষে ঘোরাঘুরি করতে।
ভুক্তভোগীদের একজন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মৌখিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েও তিনি চূড়ান্ত বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন। তিনি শুনেছেন সাবেক একজন মহাপরিচালক দেয়া তালিকা প্রধান্য পেয়েছে এই চূড়ান্ত ফল তৈরিতে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, অধিদপ্তরাধীন তৃতীয় ও চতুর্র্থ শ্রেণির মোট ১৯৬৫ জন জনবল নিয়োগ নিয়ে স্মরণকালের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে। ওই সময়ে নিয়োগের বিষয়ে অবাঞ্ছিতভাবে হস্তক্ষেপ করে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কতিপয় নেতৃবৃন্দ। সমিতির এই বিষয়ে দুর্নীনি দমন কমিশনের একাধিক চিঠির জবাবও দেয়নি অধিদপ্তরে। নজিরবিহীনভাবে নিযোগের একটি সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে থেমে যায় নিয়োগ প্রক্রিয়া। ফের চালু হয় ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে। তড়িঘড়ি করে লিখিত পরীক্ষা নেয়া ও ফল প্রকাশ হয়। জুলাই মাসে মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার পর দীর্ঘ ১০ মাসেও কোনো খবর নেই ফল প্রকাশের। হঠাৎ করেই গত কয়েকদিনের মধ্যে ফল তৈরি করে ফেলেছেন তারা।
এক প্রশ্নের জবাবে, মেজবাহ উদ্দিন দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, আইএবিএ থেকে লিখিত পরীক্ষার ফল নিয়ে এসে মৌখিকের নম্বর যোগ করা হয়েছে অধিদপ্তরে বসে। এখানে উপস্থিত ছিলেন নিয়োগ কমিটির সবাই। যেহেতু আবেদন অনলাইনে হয়েছে, তাই প্রার্থীদের কোটাসহ নানা বিষয় আমরা দেখছি। চূড়ান্ত ফল তৈরিতে আমার কোনো ভূমিকা নেই।
অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কঠোর গোপণীয়তায় ফল প্রস্তুত হচ্ছে। এখানে বাইরের কারো কিছু করার নেই।