প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন ওবায়দুল হাসান

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান বিচারপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করান।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে গত ১২ সেপ্টেম্বর এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।’এতে আরও বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হইবে।’

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সোমবার ১১ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর দেশের বাইরে থাকবেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এ সময়কালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে গেছেন ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সে সময় সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি থাকায়, গত ৩১ আগস্ট ছিল তার বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর শপথগ্রহণের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। টানা ২০ মাস বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার ৬৭ বছর পূর্ণ হয় ২৫ সেপ্টেম্বর। তাই সংবিধান অনুসারে এদিন তিনি অবসরে গেছেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ড. মো. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের সনদপ্রাপ্ত হন। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী এবং ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন। হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুন যোগদান করেন। এরপর ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ যোগদান করেন। এরপর ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ কর্মরত থাকাকালীন ১১টি মামলার রায় দেওয়া হয়। তিনি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের হংকংয়ে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে সিঙ্গাপুরে আইন সম্মেলনে যোগদান করেন এবং আর্জেন্টিনায় আন্তর্জাতিক অপরাধবিষয়ক একটি কনফারেন্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এছাড়াও ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসের শেষদিকে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, তৎকালীন যুগোস্লোভিয়ার বিচারকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন।

‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র: একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ: একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ নামক দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025920867919922