রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার মৌচাক এলাকার একটি বাসার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ফারজানা আক্তার মৌ (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। তিনি সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তবে লাফিয়ে পড়ার আগে ছাদের বাউন্ডারি দেয়ালে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে দায়ী করে কিছু কথা লিখে গেছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে মৌচাক মারুফ মার্কেটের পেছনের একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
মৃত মৌ চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার হারাইরপাড়া এলাকার সৌদি প্রবাসী আবু মুসা ও শাহনাজ আক্তার মনির মেয়ে। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে মৌ ছিল দ্বিতীয়।
শাহজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে মৌচাক মারুফ মার্কেটের পেছনে ২৩৭ / ২৩৮ নম্বর নকশি ভিলা নামে বাড়ির সামনে থেকে ওই স্কুলছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে জানা গেছে। এবং মেয়েটি ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার আগে বলপেন দিয়ে ছাদের বাউন্ডারী দেয়ালে একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছে। সেখান থেকে বলপেনটি ও তার জুতা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মৃত মৌ’র মামা মোস্তফা কামাল অভিযোগ করে জানান, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণিতে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছিল মৌ। তবে ইংরেজি, গণিতসহ তিনটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। আজকে তাদের দশম শ্রেণিতে ভর্তির শেষ দিন ছিল। এ জন্য মৌ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে যায় এবং অনুরোধ করে পরবর্তী ক্লাসে ভর্তি হওয়ার জন্য।
মোস্তফা কামাল আরও জানান, ভর্তির বিষয়টি প্রধান শিক্ষক মেনে নেননি। এরপর সেখান থেকে বাসায় এসে সবার অগোচরে ভবনের ছাদে চলে যায়। সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে মৌ। পরবর্তীতে ছাদে গিয়ে তার জুতা এবং ছাদের বাউন্ডারি দেয়ালে হাত দিয়ে কিছু লিখে দিয়ে গেছে।
ওই শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘বাবা অনেক ইচ্ছা ছিল অনেক বড় হব, ভালো কিছু করব, কিন্তু হতে পারি নাই। মাফ করে দিও, (ইতি তোমার মা মৌ)।’
‘আমি বাঁচতে চাইছি, কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিল না, Head master এর ভাইয়ের মেয়ে ফেল করছে, তাকে ওঠানো হয়েছে, কিন্তু আমাদের হয়নি। আমার মৃত্যুর পর হলেও এর প্রতিশোধ নেওয়া হোক।’