বরিশালের মুলাদীতে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর চারিত্রিক অবক্ষয়ের অভিযোগের সনদ দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছেন প্রধান শিক্ষক। ফলে ওই ছাত্রী কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারায় ১ বছর ধরে লেখাপড়া বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার চরকালেখান আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম জাহাঙ্গীর আলম তার স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে চারিত্রিক অবক্ষয়ের সনদ দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী পড়ালেখা করতে না পেরে ক্ষোভে-দুঃখে কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
ওই ছাত্রীর পিতা চরকালেখান গ্রামের আলতাফ সরদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তার মেয়ে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় পাস করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে চরকালেখান আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম জাহাঙ্গীর আলম ওই মেয়ের চারিত্রিক অবক্ষয় হয়েছে বলে একটি ভুয়া অভিযোগ এনে বিদ্যালয় থেকে স্থানান্তর প্রত্যয়নপত্র দেন।
কিন্তু স্থানান্তরপত্রে বিদ্যালয় পরিত্যাগের কারণ হিসেবে চারিত্রিক অবক্ষয়ের জন্য শব্দটি উল্লেখ থাকায় ওই ছাত্রীকে কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি করা যাচ্ছে না। ছাত্রী কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারায় ক্ষোভে-দুঃখে ৩-৪ বার আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা।
ছাত্রীকে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের কাছে অনুরোধ জানালে তিনি কোনো কর্ণপাত না করায় ছাত্রীর পিতা ও স্থানীয় আমিনুল ইসলাম সবুজ মৃধা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্তের জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব দেয়।
এ ব্যাপারে চরকালেখান আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম জাহাঙ্গীর আলম ছাত্রীকে চারিত্রিক অবক্ষয়ের সনদ দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘ওই ছাত্রী শ্রেণিকক্ষে এক সহপাঠীকে জড়িয়ে ধরে কিস করায় (চুমু দেয়ায়) বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। তবে ওই ছাত্রী বর্তমানে লেখাপড়া বন্ধ করে গার্মেন্টসে চাকরি নিয়েছে।’
বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কোনো ছাত্রীকে চারিত্রিক অবক্ষয়ের জন্য বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।