প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি |

নেত্রকোনার আটপাড়া শুনই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাসুদুর রহমান রতনের বিরুদ্ধে ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ে কর্মরত সব শিক্ষক-কর্মচারীদের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে লিখিতভাবে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক এ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর হতে অর্থাৎ ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে আদায়কৃত বেতন, টিউশন ফি, পরীক্ষা ফি, ভর্তি সেশন ফিসহ অন্যান্য খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন। এ পর্যন্ত কোনো শিক্ষক-কর্মচারী বিদ্যালয়ের অংশ থেকে তাদের প্রাপ্য বেতন-ভাতা পায়নি। 

বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিগত সময়ে কার্যনির্বাহী কমিটির রেজ্যুলেশন সাপেক্ষে যাবতীয় হিসাব-নিকাশ নিরীক্ষার জন্য ৩ সদস্যবিশিষ্ট অর্থ কমিটি গঠন করা হয়। প্রধান শিক্ষক অর্থ কমিটির কাছে কোনো প্রকার হিসাব-নিকাশ প্রদান করেন নাই। পরবর্তীকালে অর্থ কমিটির সব সদস্য প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগ করেন।

এছাড়া বিদ্যালয়ের যাবতীয় আয়ের অর্থ ব্যাংক হিসেবে রাখার বিধান থাকলেও তিনি নিজ হেফাজতে রেখে নিজ ইচ্ছা মাফিক খরচাদি করে থাকেন। কমিটির রেজ্যুলেশন ব্যতিরেকে বড় বড় অঙ্কের খরচের টাকা ব্যয় করে থাকেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল এবং বিধিবহির্ভূতভাবে লাইব্রেরিয়ান পদে লোক নিয়োগ করার ফলে প্রধান শিক্ষকের নামে মামলা চলমান রয়েছে। 

প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ব্যাপকভাবে উপজেলায় প্রকাশিত হলে এ উপজেলার ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়, পাহাড়পুর উচ্চ বিদ্যালয় ও বাউসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের সমঝোতার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতার ফলে তারাও ব্যর্থ হন।

অপর দিকে বিগত কার্যনির্বাহী কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলে প্রধান শিক্ষক তার অনুগত ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠনের পাঁয়তারা করলে কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়। আদালতের মামলা চলমান থাকলেও এর তথ্য গোপন করে তিনি তার অনুগত ব্যক্তিদের নিয়ে এডহক কমিটির অনুমোদন নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করে যাচ্ছেন।

প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যে অনৈক্যের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক তার বিশেষ অপকৌশলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পান না।

সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন। শিক্ষার্থীদের টয়লেটগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীরা টয়লেট ব্যবহারে বিপাকে আছে। বিদ্যালয়ের জাতীয় পতাকাটি ছেঁড়া ও বিবর্ণ। বিদ্যালয় চলাকালীন জাতীয় পতাকা নিয়মিত টয়লেটের ট্যাংকির ওপর উত্তোলন করা হয়। এলাকাবাসী জাতীয় পতাকার অবমাননা হচ্ছে বলে মনে করেন।

প্রধান শিক্ষক অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আতিকুর রহমান খান অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025529861450195