সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জের তিননান্দিনা রশিদিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নানা অনিয়মের অভিযোগে স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে একজন এবং নৈশ প্রহরী পদে একজনসহ মোট দুইজনের নিয়োগ পরীক্ষা বিদ্যালয়ের হলরুমে হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তী সময়ে অনিয়মের অভিযোগ এনে এলাকাবাসীর সেই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেয়নি। ফলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
জানা যায়, বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী এ দুটি পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ৮ জন ও নৈশ প্রহরী পদে ৮ জন প্রার্থীর আবেদন জমা পড়ে। সেই প্রেক্ষিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন প্রধান শিক্ষক। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাদৎ হোসেন, ডিজির প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ বিএল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা খন্দকার নুরুন্নাহার, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আবু তালেব সেখ। সব প্রস্ততি সম্পন্ন হলেও শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সভাপতি গাজী মো. আব্দুর রহমান সেখ অনুপস্থিত থাকায় প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে বেধে যায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে সলঙ্গা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সহাকারী প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী একই বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ক শিক্ষক আব্দুস সবুর জানান, প্রধান শিক্ষক এনামুল হক তার পছন্দের প্রার্থী একই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিষয়ক শিক্ষক জেসমিন আরা জুইয়ের নিকট থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছেন এমন কারণেই সভাপতি নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিত হননি।
স্থানীয়রা জানান, জেসমিন আরা জুইকে নিয়োগ দেয়ার জন্য তার স্বামী বকুল হোসেন ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মহড়া দেয়া শুরু করে। এসময় গ্রামের সাধারণ মানুষ এর প্রতিবাদ করে নিয়োগ পরীক্ষা পণ্ড করে দেয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, জেসমিন আরা জুই কম্পিউটারের শিক্ষক হলেও তিনি কিছ্ইু জানেন না। তাকে নিয়োগ দেয়া হলে প্রতিষ্ঠানের চরম ক্ষতি সাধন হবে এবং লেখাপড়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।
নিয়োগ পরীক্ষা পণ্ডের কারণ জানতে প্রধান শিক্ষক মো. এনামুল হকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হঠাৎ করে অনুপস্থিত থাকায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে টাকার বিনিময়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহাদৎ হোসেনে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত পরীক্ষায় অনিয়ম এবং পেশী শক্তির কারণে স্থগিত করা হয়েছে।