প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

কুমিল্লার তিতাসের ৩৩নং দক্ষিণ নারান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানাহ অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে অভিযোগের আড়াই মাসেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। 

জানা যায়, গেলো বছরের ১২ ডিসেম্বর গ্রামবাসীর পক্ষে মো. মনজিল সরকার ও মো. লিটন স্বাক্ষর করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমির হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগে উল্লেখ করেন, ৩৩নং দক্ষিণ নারান্দিয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমির হোসেন মোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্ধের টাকা ভুয়া ভাউচারে আত্মসাৎসহ বিদ্যালয়ের সরঞ্জামাদি বিধি বহির্ভূতভাবে বিক্রি করে আত্মসাৎ এবং নিয়মিত অনেক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান না করে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সাবেক কমিটির সভাপতির দুই সন্তানকে উপবৃত্তির টাকা প্রদান।

এছাড়াও প্রাক-প্রাথমিকের টাকা শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও ২০১৮-২২ সালের বরাদ্দ ব্যয় না করে আত্মসাৎ করেন এবং স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে এবং সমাপনী সার্টিফিকেট প্রদান করতেও উচ্চ হারে ঘুষ নেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী অভিভাবকদের সাথে গ্রামবাসীও অভিযোগের পক্ষে সত্য নিশ্চিত করে কথা বলেন।

স্থানীয় এক মাঝি অভিযোগ করেন, তার সন্তান ৩ বছর ধরে বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করলেও তাকে উপবৃত্তির টাকা দেয়নি। একই অভিযোগ হাসান ও হোসাইন নামে আরো দুই শিক্ষার্থীর। এমন অনেক শিক্ষার্থীর নাম থাকলেও তারা উপবৃত্তির টাকা পায়নি বলে জানান।

অভিযোগপত্রে স্বাক্ষরকারী এসএমসি সদস্য মো. মনজিল সরকার বলেন, আমরা ৩বছর কমিটিতে ছিলাম। কিন্তু বিদ্যালয়ে কখন কি বরাদ্ধ এসেছে, কোথায় কি ব্যয় হয়েছে, কিছুই আমরা জানি নাই।

প্রধান শিক্ষক মনগড়া রেজুলেশন করে সভাপতির সাথে যোগসাজশ করে এসব অনিয়ম-দুর্নীতি করেছে। আমি এই শিক্ষকের প্রত্যাহার চাই এবং বিধিমত ব্যবস্থা চাই। এসএমসির একাধিক সদস্য একই অভিযোগ করেন। তবে রেজুলেশনে স্বাক্ষরের বিষয়েও তারাও জানে না বলে প্রধান শিক্ষকের সামনেই জানান।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ৩৩নং নারান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আমির হোসেন মোল্লা জানান, সবগুলো অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক ও ভিত্তিহীন। তিনি কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি করেননি। তিনি বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন ও শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে মসজিদের একটি গাছ ছিল দাবি করে সেটি কেটে বিক্রি করেছেন এবং সাবেক সভাপতির দুই সন্তান ৬ মাস বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করায় তাদেরকে উপবৃত্তি দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা পারভীন বানু জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কার্যক্রম চলছে, সবগুলো বিষয়ই খতিয়ে দেখা হচ্ছে, অনিয়ম বা দুর্নীতি হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি কিছুটা আশ্চর্য হয়ে বলেন, এমনটা হওয়ার কথা না। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে শিক্ষার মান বেড়েছে ও বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ফল পরিবর্তনের আশ্বাসে আর্থিক প্রতারণা, সতর্ক করলো কারিগরি বোর্ড - dainik shiksha ফল পরিবর্তনের আশ্বাসে আর্থিক প্রতারণা, সতর্ক করলো কারিগরি বোর্ড সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার অধ্যাপক পদকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার দাবি মর্যাদা রক্ষা কমিটির - dainik shiksha অধ্যাপক পদকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার দাবি মর্যাদা রক্ষা কমিটির নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা পাচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব - dainik shiksha জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা পাচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব সংযুক্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের কপাল খুলছে - dainik shiksha সংযুক্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের কপাল খুলছে মধ্যরাতে ববি-বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘ*র্ষ, আহত ২৫ - dainik shiksha মধ্যরাতে ববি-বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘ*র্ষ, আহত ২৫ এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050718784332275