ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার বাইতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধের দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি সুবিদপুর ইউনিয়নের মজকুনী গ্রামের ১৮ জন বাসিন্দার স্বাক্ষরিত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তের জন্য দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত বুধবার গৌরনদীর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র হাওলাদার ও বরিশাল সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুলে কর্মরত থেকে সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তার পছন্দের লোকজনকে নিয়ে স্কুলের কমিটি গঠন করেছেন। ওই কমিটির সদস্যদের সন্তানরা স্কুলে লেখাপড়া করেন না।
প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জোরপূর্বক কবির হাওলাদারের জমি দখল করে নিয়ে সেই জমির ওপর একটি দোতলা ভবন নির্মাণ করছেন। ওই ভবনের ঠিকাদার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলামের সঙ্গে যোগসাজশে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মাণ করছেন। ঠিকাদারের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়ে স্কুল কমিটির সদস্যদের নিয়ে ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। স্কুলের বিভিন্ন খাতের সরকারি অর্থ তারা প্রধান শিক্ষককে নিয়ে ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। স্কুলের কোন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম করেন না বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, অর্থ বরাদ্ধ শুধু কাগজে কলমে হয়, সমুদয় টাকা সরকারের মন্ত্রী, এমপি, সচিব ও শিক্ষা অফিসারদের ভাগ করে দিতে হয়।
এ ছাড়া, প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যের সঙ্গে একমত না হওয়ায় মো. আল আমিন, লাভলী বেগমের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। এ মামলায় তার পক্ষে সাক্ষী না দিলে আ. আজিজ খানকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন।
এ ছাড়া, স্কুলের সহকারী শিক্ষকেরাও সঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিকভাবে পাঠদানের বিষয়ে শিক্ষকদের কোনো গুরুত্ব নেই। এমনকি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম নিজেও ব্যক্তিগত কাজে স্কুলের বাইরে থাকেন। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সঠিকভাবে ক্লাস করানোর পরিবর্তে তিনি স্কুলের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নানা প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি করে টাকা উপার্জন করার মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলেও অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, যার প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে, এগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়ে দেবো।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বরিশাল সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা বাদী ও বিবাদীদের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য নিয়েছি। এর পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ সংগ্রহ করেছি। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো যাবে।