গাজীপুরের কাপাসিয়ার নাশেরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জোতীষ চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেট প্রদান, নিয়োগ বাণিজ্য, শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ম্যানেজিং কমিটির নির্ধারিত সভা ও বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে গত দুইদিন যাবত প্রধান শিক্ষক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. কামরুজ্জামান ভূঁইয়া সোহেল জানান, প্রধান শিক্ষক জোতীষ চন্দ্র দেবনাথ ও অফিস সহকারি মো. ইউনুছ আলী সরকার ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। কিছুদিন যেতে না যেতে প্রধান শিক্ষক তাকে ডিগ্রি পাসের জাল সার্টিফিকেট দিয়ে সহকারী শিক্ষকের পদে নিয়োগ দেয়ার প্রলোভন দেখান। অফিস সহকারি ৫ লাখ টাকার দফারফার এক পর্যায়ে চড়াসুদে ঋণ করে ৫০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষককে প্রদান করেন। পরবর্তী সময়ে অফিস সহকারিকে প্রদানকৃত ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেটটি জাল প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা থেকে সে বাদ পড়েন।
র্দীঘ প্রায় দশ বছর অতিবাহিত হলেও তার টাকা ফেরৎ না দেয়ায় সে গত ২২ আগস্ট ম্যানেজিং কমিটির নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। গত ২৪ আগস্ট ম্যানেজিং কমিটির সভায় সকলের উপস্থিতিতে বিষয়টি প্রমাণিত হয় এবং প্রধান শিক্ষক তা স্বীকার করে টাকা ফেরৎ দেয়ার লিখিত অঙ্গীকার করেন। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক জোতীষ চন্দ্র দেবনাথ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার, নিয়মিত ক্লাস না করা, ক্লাস রুটিন পরিবর্তন ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী জরুরি সভা করে তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেছেন। ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষককে আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে কারন দর্শাতে বলা হয়েছে। পালিয়ে বেড়ানো প্রধান শিক্ষক নিজেকে বাঁচাতে চিকিৎসার বাহানা ও বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে।
এ ব্যাপারে অভিভাবকরা জানান, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম আকিব ও প্রধান শিক্ষক জোতীষ চন্দ্র দেবনাথের যোগসাজসে ৪ জন শিক্ষককে নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অথচ বর্তমান সভাপতি বিদ্যালয়ের নাম ‘নাশেরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ থেকে ‘নাশেরা উচ্চ বিদ্যালয়’ নামকরণসহ পূর্বের সকল প্রকার অনিয়ম দূর করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করেন।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।