নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির নয় ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে বলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামান মিন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
আহতদের মধ্যে অজ্ঞান অবস্থায় গুরুতর আহত দুই ছাত্রীকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে আগিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে সপ্তম শ্রেণির নয়জন ছাত্রী দ্বিতীয় পর্বের ক্লাস শেষে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে বারান্দায় দাঁড়ায়। ছাত্রীদের ক্লাস থেকে বের হওয়ার ঘটনাটি প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামান মিন্টুর নজরে আসে। তিনি পিয়ন দিয়ে ওই ছাত্রীদের তার কার্যালয়ের কক্ষে ডেকে আনেন।
পরে তিনি এ ঘটনায় বেত দিয়ে ওই ছাত্রীদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। এতে বিশকাকুনী ইউনিয়নের বিষমপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে লাভলি আক্তার (১৪) ও আগিয়া গ্রামের আফতাব উদ্দিনের মেয়ে তানজিলা আক্তার (১৪) জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আহত লাভলি ও তানজিলাকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আহত অন্য শিক্ষার্থীরা হলো, মনি আক্তার, নিলা আক্তার, শিমু আক্তার, শিল্পী আক্তার, সুমাইয়া আক্তার, হালিমা আক্তার ও স্বর্ণা আক্তার। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘটনার পর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিছিল করে বিক্ষোভ প্রকাশ করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করে স্লোগান দেয়।
হাসপাতালে ভর্তি তানজিলা আক্তারের মা ঝর্না আক্তার জানান, মেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি প্রধান শিক্ষক তাকে পিটিয়ে আহত করেছে। চিকিৎসার পর তানজিলার জ্ঞান ফিরেছে। আমি এর বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রী জানান, কোন কারণ ছাড়াই প্রধান শিক্ষক ওই নয় ছাত্রীদের বেত দিয়ে বেধড়ক পিটাতে থাকেন। এভাবে বিভিন্ন সময় তিনি ছাত্রীদের নির্যাতন করেন।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বদরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ওই ছাত্রীরা ক্লাস থেকে বের হয়ে গোলমাল করছিল। আমি পাশের একটি কক্ষে ক্লাস নিচ্ছিলাম। তাদের ক্লাসের শিক্ষক আসতে একটু দেরি হচ্ছিল। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তাদের একটু শাসন করেছি। বেত দিয়ে মারিনি। ধমক দিয়েছি। ছাত্রীরা কীভাবে আহত হলো এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তর দেননি তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল বারী বলেন, বিষয়টি আমি শুনে ওই প্রধান শিক্ষককে ডেকেছি এবং হাসপাতালে খুঁজ নিয়েছি। বর্তমানে ছাত্রীরা সুস্থ আছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। এমন হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।