সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সুপারিশের ১৫ মাস পর নন-ক্যাডারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন ৩৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ৪৭০ জন। এখনও নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন আরও ৪২৮ জন।
মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়-২) মনোয়ারা ইশরাতের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগ দিতে বলা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, নিয়োগপ্রাপ্তরা সংশ্নিষ্ট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে যোগদানপত্র দেবেন। পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তাদের সংশ্নিষ্ট উপজেলায় শূন্য পদে পদায়ন করবেন।
এর আগে গত বছরের ১০ আগস্ট ৩৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ৮৯৮ জন নন-ক্যাডারকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সারাদেশে প্রায় ২০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এসব পদ দ্রুত পূরণের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে কয়েকজন প্রার্থী পরিচয় গোপন রেখে বলেন, নিয়োগ পাওয়ার পরও আনন্দের চেয়ে বেশি বিষাদে রয়েছেন তারা। কারণ অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে ২০১৪ সালে ৩৪তম বিসিএসে অংশ নিয়ে তারা উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু পদ ফাঁকা না থাকায় এতদিন চাকরি পাননি। এমন প্রার্থীদের প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। এতেও সুফল মেলেনি। পরে গত বছর তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এখন কাজে যোগদানের আগে জানা গেল, দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগ পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু নির্ধারিত স্কেলে বেতন দেওয়া হবে না তাদের। নিয়োগপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তারা বেতন পাবেন জাতীয় বেতন স্কেলের দশম গ্রেডের (১৬ হাজার টাকার স্কেলে) চেয়েও দুই ধাপ নিচের স্কেলে (১১ হাজার ২০০ টাকা)।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা ১৬ হাজার টাকা স্কেলে বেতন পান। প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল তাদের সমান করা হলে শিক্ষা কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমানে দেশের ৬৪ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১১ হাজার ২০০ টাকার স্কেলে বেতন পান। বিসিএসে উত্তীর্ণ ৮৯৮ জনকে ১৬ হাজার টাকার স্কেলে নিয়োগ দিতে গেলে পুরো ৬৪ হাজার প্রধান শিক্ষককেই একই স্কেলে বেতন-ভাতা দিতে হবে। এতে রাতারাতি সরকারের বিপুল ব্যয় বেড়ে যাবে। তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।