আগামী ৩০ জুন শুরু হবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। প্রবেশপত্র না পাওয়ায় এ পরীক্ষায় জামালপুর ‘শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের’ ৯৬ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দিনভর কলেজ প্রাঙ্গণে বসে থেকেও প্রবেশপত্র পায়নি তারা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে।
অভিভাবকরা জানায়, শিক্ষার্থীরা গত দুই বছর ধরে শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের কলেজ শাখায় লেখাপড়া করছে। তারা নিয়মিত বেতন, ফি পরিশোধ করেছে। এইচএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপ বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু অধ্যক্ষ সব পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েও রেজিস্ট্রেশন কোনোটাই করেননি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষ এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তাদের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে চরম উৎকণ্ঠায় পড়েছে তাদের অভিভাবকরা।
এ ঘটনায় পরীক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছে প্রবেশপত্র চাইতে গেলে অধ্যক্ষ নানা টালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি কলেজ থেকে সটকে পড়েন।
পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের কলেজ শাখার কোনো অনুমোদন নেই। ফলে তাদের রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপ হয়নি।
এ বিষয়ে শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর জানান, এ ঘটনায় কলেজ অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিমকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ।
এ ব্যাপারে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ছাত্র সমাজের স্বপ্ন পূরণের পথে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টাকা নিয়েও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন ধ্বংস করে দেয় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে তাদের পরীক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিম ৯৬ জন পরীক্ষার্থীর কাছে থেকে রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলআপের টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সব শিক্ষার্থী যাতে পরীক্ষা দিতে পারে সেজন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
জামালপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো। ছানোয়ার হোসেন বলেন, যে প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখার পাঠদানেরই অনুমতি নেই। সেখানে তারা কীভাবে এতগুলো শিক্ষার্থীর কাছে থেকে রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপের কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তা বোধগম্য নয়। তাই এ ব্যাপারে দায়ী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেবেন তারা।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো। শফিউর রহমান বলেন, এইচ.এস. সি পাঠদানের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপের জন্য টাকা নেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ। তদন্ত সাপেক্ষে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।