প্রভাষকদের পদোন্নতির মূল্যায়ন কমিটি হবে কবে?

আশরাফুল ইসলাম |

বেসরকারি মানেই বেওয়ারিশ! তা না হলে এতো কিছু হলো অথচ কমিটি হলো না। বলছি, বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের কথা। সব কিছুই যেন খাপছাড়া। যেভাবে যার যা মনে হচ্ছে সেটাই চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। কোন নিয়মের বালাই আছে বলে মনে হচ্ছে না। একই যোগ্যতার শিক্ষক একজন হবেন সহকারী অধ্যাপক অপরজন জেষ্ঠ প্রভাষক। তবু ভালো কিছুতো হলো। কিন্তু না, তা কখন হবে, কিভাবে হবে কে জানে?

সেই ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নীতিমালায় বলা হয়েছিল প্রভাষকদের ১০ বছরে একটি এবং ১৬ বছরে একটি উচ্চতর স্কেল দেয়া হবে। কিন্তু অদ্যাবধি দেয়া হয়নি। বলা হলো ফিক্সেশনের জটিলতায় শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা ছাড়া উচ্চতর স্কেল দেয়া সম্ভব নয়। এরপর অপেক্ষার পালা। তার অবসান হলো নতুন নীতিমালায়। অবশেষে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে আবার সংশোধিত নীতিমালা জারি হলো। যেখানে ফিক্সেশনের জটিলতা কেটেছে। 

তবে নতুন জটিলতা প্রভাষকদের পদোন্নতির মূল্যায়ন। কিভাবে কত নম্বরে মূল্যায়ন হবে সেটা বলা হয়েছে নীতিমালায়। কিন্তু মূল্যায়ন কমিটি গঠন করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এখানেই শঙ্কা। শিক্ষা অধিদপ্তর গত ৩ বছরে ফিক্সেশনের নির্দেশনা দিতে পারেনি। তারা এই মূল্যায়ন কমিটি গঠন করবে কতদিনে?

নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে কর্মরত এমপিওভুক্ত ৫০ ভাগ প্রভাষক মূল্যায়নের মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক ও জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হবেন। অবশিষ্ট প্রভাষক প্রথম এমপিওভুক্তির তারিখ থেকে ১০ বছরে একটি উচ্চতর স্কেল পেয়ে ৯ম থেকে ৮ম গ্রেডে এবং ৬ বছরের মধ্যে অর্থাৎ মোট ১৬ বছর চাকুরি পূর্ণ হলে ৬ষ্ঠ গ্রেডে সহকারী অধ্যাপক বা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হবেন। সমগ্র চাকরিজীবনে দুটির বেশি উচ্চতর স্কেল পাবেন না।

এখানে আট বছরে মূল্যায়ন কমিটির কথা বলা হলেও ১৬ বছরের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন কমিটির মূল্যায়ন লাগবে কি না তা স্পষ্ট করা হয়নি। আবার অনেক প্রভাষক দুই বছরে ৮ম এবং আট বছরে ৭ম গ্রেড পেয়েছেন। অনেক প্রভাষক আট বছরে সরাসরি ৭ম গ্রেড পেয়েছেন। যাদের অনেকেই এখন নিরবিচ্ছিন্নভাবে ১৬ বছর চাকরিকাল পূর্ণ করেছেন। তাদের কিভাবে সহকারী অধ্যাপক বা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক করা হবে? যদিও সাধারণভাবে ধরে নেয়া হচ্ছে চাকরিকাল ১৬ বছর পূর্ণ হলে সকলেই পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক বা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হবেন। এ বিষয়ে নীতিমালায় স্পষ্ট থাকলে ভালো হতো। তাহলে লাখো প্রভাষক নীতিমালা পেয়ে উল্লাস করতেন। এভাবে দুশ্চিন্তায় পড়তে হতো না। 

আবার অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ নিয়োগের যোগ্যতায় ২০১৮’র নীতিমালার বৈষম্যই বজায় রাখা হয়েছে নতুন নীতিমালায়। এখানে প্রভাষকদের বঞ্চিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে প্রজ্ঞাপন অথবা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্পষ্ট করবেন বলে অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন লাখো প্রভাষক।

পরিশেষে বলবো সব চাহিদা পূরণ হবার নয়। যা হয়েছে তার অনেকই ভালো হয়েছে। আর একটি মৌলিক চাওয়া রয়েছে। আর তা হলো জাতীয়করণ।  এটুকুও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সংশ্লিষ্টরা করবেন বলে দৃঢ় আশাবাদ রাখছি।

লেখক : আশরাফুল ইসলাম, প্রভাষক, হরিপুর দুর্গাদাস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেরিতে এসে স্বপ্নভঙ্গ গুচ্ছে ভর্তিচ্ছু অনেকের - dainik shiksha দেরিতে এসে স্বপ্নভঙ্গ গুচ্ছে ভর্তিচ্ছু অনেকের নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ ৭ দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন - dainik shiksha নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ ৭ দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মানববন্ধন কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি প্রধানমন্ত্রীর - dainik shiksha জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি প্রধানমন্ত্রীর প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গ্রেফতার - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক - dainik shiksha নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048999786376953