সাম্প্রতিক পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা প্রমাণ করেছি আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু হয়।
সোমবার (৩ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নব-নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভোটে আপনারা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে।
তিনি বলেন, এক সময় আমাদের দেশে ভোট মানেই ছিল একটা যন্ত্রণা, মানুষের ওপর জুলুম-অত্যাচার। কিন্তু এ যে সিটি করপোরেশনগুলোতে একে একে নির্বাচন হলো, মানুষ স্বাধীনভাবে তার ইচ্ছেমতো ভোট দিতে পারলো, এটাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে বলেই তার ফলে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্বাচন যে অবাধ-সুষ্ঠু হয়, নিরপেক্ষ হয় সেটাই আমরা প্রমাণ করেছি।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্টের পর দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু জাতির পিতাকে হত্যা, জাতীয় নেতাদের হত্যা করা হয়নি, এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। গণতন্ত্র বন্দি হয়ে যায় ক্যান্টনমেন্টে। দেশের মানুষের কোনো অধিকার ছিল না।
উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আরও উন্নত হোক সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের উন্নয়ন শুধু নগর কেন্দ্রিক না, তৃণমূল থেকে যাতে উন্নতি হয় আমরা সেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। গ্রামের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি যাতে হয় সে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকবে, বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
জনগণের সেবা করা জনপ্রতিনিধিদের কর্তব্য
জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকতার সঙ্গে জনগণের সেবা করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে, আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। জনগণের আস্থা-বিশ্বাস আপনাদের ওপর, যে যে দলেরই হোন কেন, জনগণের সেবা করাটাই আপনাদের কর্তব্য।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সবাইকে এ কথাই বলবো- আমরা যখন কাজ করি, আমরা কিন্তু প্রত্যেকটা এলাকার উন্নয়ন করি। সেটা মাথায় রেখে আপনাদের আরও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স ঘোষণার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে শপথবাক্য পাঠ করান শেখ হাসিনা।
এরপর কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম।
এর আগে একই স্থানে আলাদা অনুষ্ঠানে শপথ নেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত), গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুন ও এ তিন সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা।
এ অনুষ্ঠানেও মেয়রদের শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী ও কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় শপথ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী খুলনা, বরিশাল, গাজীপুর, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র-কাউন্সিলরদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন।