সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চাঞ্চল্যকর প্রশ্ন ফাঁস মামলায় শিল্পপতি মনিরুজ্জামান ভূঁঞা শামিমসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিল পুলিশ। গত ২৮ জুন নেত্রকোনা জেলা সদরের বিভিন্ন কেন্দ্রে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে সংগ্রহ করে কিছু পরীক্ষার্থীর সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে উত্তর সরবরাহ করছিল বলাইশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান ছোটন, তার স্ত্রী হাওয়া বেগমসহ একটি শক্তিশালী চক্র।
কেন্দুয়া পৌর শহরের টেঙ্গুরী ছয়আনি মহল্লার শিল্পপতি মনিরুজ্জামান ভূঁঞা শামিমের বসতবাড়ির দোতলা ঘরে বসে ওই চক্রটি পরীক্ষা কেন্দ্রে কিছু পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তর সরবরাহ করছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কেন্দুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ও কেন্দুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান একদল পুলিশ নিয়ে ওই বাড়িটি ঘেরাও করে। দুই ঘণ্টা ধরে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে সে ঘর থেকে ওই চক্রের ১২ নারীসহ ৩৪ জনকে আটক করা হয়। পুলিশ এ সময় শামিমের বাড়ির দোতলা থেকে কয়েকটি ল্যাপটপ, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম জব্দ করে। এ ঘটনায় কেন্দুয়া থানা পুলিশের এসআই আবুল বাশার বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ ও পাবলিক পরীক্ষা অপরাধ আইনে ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পরে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এদিকে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আট ও উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকসহ ১০ জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানা পুলিশের সাবেক পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার জানান, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় এজাহারভুক্ত ৩৭ ও তদন্তে প্রাপ্ত একজনসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।