প্রসঙ্গ ব্যর্থ রাষ্ট্র : ড. আলী রিয়াজের সেই সাক্ষাৎকার

মিজানুর রহমান খান, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

সংবিধান ও আইন-আদালত বিশেষজ্ঞ লেখক ও সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় অনেক নতুন বিষয় সংযোজন করেছেন। দলমত নির্বিশেষে বিজ্ঞজনরা সাংবাদিকতায় তার সেসব অবদান স্বীকার করেন একবাক্যে। সাক্ষাৎকার নেওয়ারও একটা নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। গত দুই দশক ধরে ঢাকার প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলো সেই পদ্ধতি অনুসরণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে এমনই এক সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন ড. আলী রিয়াজের। বর্তমান সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় দৈনিক আমাদের বার্তার পাঠকদের জন্য তা প্রকাশ করা হলো-     

মিজানুর রহমান খান: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশকে কী চোখে দেখা হয়?
আলী রিয়াজ: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিষয়ে আগ্রহ খুবই সাম্প্রতিক। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে একটা নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।

মিজানুর রহমান খান: ক্লিনটন ও বুশ জামানার নীতির মধ্যে পার্থক্য কী?

আলী রিয়াজ: প্রথমটি ছিল একান্তভাবেই অর্থনৈতিক। দ্বিতীয়টি নিরাপত্তা। বুশের নীতি হলো সম্পূর্ণভাবে নিরাপত্তাগত। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মার্কিন প্রশাসন বা থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলোর মধ্যে এটি সমালোচনার সম্মুখীন হয়নি। ২০০৩-এ প্রথম বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কাউন্সিল (সিএফআর) টাস্কফোর্স তৈরি করেছিল। ভারত ও পাকিস্তানে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূতরা ছিলেন। ওই কাউন্সিল চাপ দিতে শুরু করল যে, এই নীতি কাজ করবে না। দক্ষিণ এশিয়াকে নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। এই যে 'টার্নিং পয়েন্ট', এখানেই মার্কিননীতিতে বাংলাদেশের অভিষেক ঘটেছে।

২০০১ খ্রিষ্টাব্দের শেষাশেষি তারা বাংলাদেশের ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। আমার ধারণা, এর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল চারদলীয় জোটের বিজয় এবং তার পরে সংখ্যালঘু নির্যাতন। জামায়াত ও আরও কট্টর ইসলামি ঐক্যজোট নিয়ে গঠিত জোটটি যখন - জিতল, তখনো তারা উদ্বিগ্ন ছিল না। বিশ্লেষকদের মধ্যে কোনো উৎকণ্ঠা আমার চোখে পড়েনি। পরের ছয় মাসের ঘটনাপ্রবাহে বিশ্লেষক ও মার্কিনি এজেন্সিগুলো উদ্বিগ্ন হতে শুরু করে। তার আগ পর্যন্ত তারা বাংলাদেশকে মডারেট মুসলিম দেশ হিসেবে গণ্য করছিল। তারা হঠাৎ বুঝতে পারে, এই দৃষ্টিভঙ্গি সম্ভবত কাজ করবে না। বাস্তবতা বদলাচ্ছে। এর আগে ১৯৯৬-৯৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে 'মৌলবাদী' বা জঙ্গী সংগঠনের তৎপরতাও জোরোশোরে শুরু হয়। এগুলো কতটা প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে, তা ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বোঝা যায়। 

মিজানুর রহমান খান: এই পর্যায়ে কী উপলব্ধি তৈরি হয়?

আলী রিয়াজ: বুশ প্রশাসনের যে নিরাপত্তাকেন্দ্রিকতা, তাতে এটা দারুণভাবে খাপ খায়। এবং বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি একটা বিরাট বাঁক নেয়। নিঃসন্দেহে এটা 'মেজর টার্নিং পয়েন্ট'। বাংলাদেশের ইসলামি সংগঠনগুলোকে কীভাবে দেখা হবে-এর পাশাপাশি বাংলাদেশ নিয়ে আরও দুটো উদ্বেগ রয়েছে, যা বাংলাদেশবিষয়ক নীতিনির্ধারণী বিবৃতিতে খুব সূক্ষ্মভাবে প্রকাশ করা হয়। যেমন, বাংলাদেশের মূলধারার রাজনীতিতে নেতৃত্বের সংকট। ২৭ নভেম্বরে নিকোলাস বার্নস বলেছেন, দেশটির নেতৃত্ব কি তাদের মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রেখে শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে? এটাই ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের মূল প্রতিপাদ্য। যদি তারা নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে? সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংস্কৃতি হবে হিংসাত্মক। ইসলামি জঙ্গিরাও এখানে সক্রিয়। এসবের সমন্বয় হচ্ছে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। ২০৫০ খ্রিষ্টাব্দে জনসংখ্যায় ভারত চীনকে, পাকিস্তান ইন্দোনেশিয়াকে ছাড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা হবে সাড়ে ২৪ কোটি। সংখ্যাগরিষ্ঠ এই তরুণদের সামনে ভবিষ্যৎ না থাকলে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে তারা কীভাবে খাপ খাওয়াবে, সেটা একটি বড় ধরনের উদ্বেগের বিষয়। আরেকটি হলো, ধর্মীয় কট্টর সংগঠনগুলোর তৎপরতা ও তার সম্ভাব্য পরিণতি। 

মিজানুর রহমান খান:  বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বলার গ্রহণযোগ্যতা, আদৌ রয়েছে? 

আলী রিয়াজ: পুরোপুরি ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়ার কিছু উপাদান থাকতে পারে। তবে আবার কিছু উপাদান রয়েছে, যা তাকে প্রতিহত করবে। যেমন এনজিও, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের ভূমিকা একে প্রতিরোধ করবে। কিন্তু গোটা ব্যবস্থাই এতো দুর্বল যে, এখানে বিরাট একটা রদবদল ছাড়া কিছু হবে না। হয়তো অর্থনৈতিক অগ্রগতি হবে। কিন্তু রাজনৈতিক দিকটি সীমিত থাকবে। এবং ক্রমাগতভাবে তা আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবে একটা অজ্ঞাত ফ্যাক্টর রয়ে গেছে। এটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক হতে পারে। 

মিজানুর রহমান খান: চীন ও ভারত অর্থনীতিতে বিরাট শক্তি হয়ে উঠছে। সেই বিবেচনায় বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র কী চোখে দেখছে?

আলী রিয়াজ: কন্ডোলিৎসা রাইস ভারত সফরকালে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির একটা মৌলিক বিষয় বলেছেন। এখন থেকে বাংলাদেশবিষয়ক নীতি ভারতকে আস্থায় রেখে বা আমরা ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করব। অতীতে কখনোই মার্কিন বিদেশনীতিতে আঞ্চলিক কার্যকরণ - বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এখন সুস্পষ্টভাবে তাঁরা বুঝেছেন, কেবল বৈশ্বিক পটভূমিতে দক্ষিণ এশিয়াকে দেখা যাবে না।

মিজানুর রহমান খান:  কিন্তু তাতে অনেকে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন?

আলী রিয়াজ: কারণ ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক ভালো নয়। অনেকের আশঙ্কা ছিল, ভারত অতীতে কখনো কখনো আদর্শতাড়িত বিদেশনীতি পরিচালনা করেছে। বাস্তবসম্মত নয়। প্রশ্ন হলো, এখন যদি তার নীতি আদর্শঘেঁষা হয়, তাহলে ওয়াশিংটনের জন্য তা ভালো হবে কি না; বাংলাদেশের জন্য তা ভালো হওয়ার তো কোনো কারণই নেই। 

মিজানুর রহমান খান:  ভারতের অবস্থান এখন কী?

আলী রিয়াজ: আদর্শঘেঁষা নীতি থেকে ভারত আজ পুরো না বেরুলেও ইউপিএ সরকারের বিদেশনীতি এখন পর্যন্ত বাস্তবসম্মত (প্রাগমেটিক), আদর্শকেন্দ্রিক নয়। এবং এটা সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের কারণেও ঘটেছে। এটাই একমাত্র নয়, তবে বড় কারণ।

মিজানুর রহমান খান: কন্ডোলিৎসা রাইসের সেই বিবৃতির পরে বিএনপি সরকারে একটা ধারণা হয়, আমরা তো বিপদে পড়ে গেলাম। অনেকের মতে, ভারত এখনো গোঁড়া ধ্যান-ধারণার মধ্যে পড়ে আছে। ভারতের বাংলাদেশনীতি কাজ করছে না। এটা পাক-ভারত বা ভারত-মার্কিন বোঝাপাড়ার ভিত্তিতেও চললে ভালো হতো। 
আলী রিয়াজ: এখন যুক্তরাষ্ট্রের যে আঞ্চলিক নীতি, সেখানে সে ভারতকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। আবার বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে দেখার সময় ভারতকে সে সঙ্গে রাখছে না।

মিজানুর রহমান খান:  গত দুই বছর হলো মনে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখছে না। 

আলী রিয়াজ: ওই যে বললাম, তার স্বকীয়তা সেখানেই, যা বিশ্ব প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। যেখানে আঞ্চলিক তাৎপর্য রয়েছে এবং ভারত ক্ষতিকারক মনে করতে পারে সেখানে যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছুই করবে বলে মনে হয় না। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ রাজনীতিতে সে তার ইউরোপীয় মিত্রদের নিয়ে যা কিছু করছে, তার কোনো আঞ্চলিক তাৎপর্য নেই।

মিজানুর রহমান খান:  অর্থনৈতিক দিক, যেমন গ্যাস নিয়ে একটা চাপ ছিল।

আলী রিয়াজ: এটা এখনো আছে ও থাকবে। স্রেফ বাণিজ্যিক বিবেচনা থেকেই থাকবে। অন্যত্রও যখন তেল আবিষ্কৃত হয়েছে, তখনো তারা সেই চেষ্টা করেছে। অনেকে একে যেভাবে রাজনৈতিক তাৎপর্য দিয়েছেন, তা ঠিক বোধগম্য নয়। এই যে কনটেইনার পোর্ট ধরুন। যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বললে পোর্ট প্রসঙ্গ থাকবেই। 

মিজানুর রহমান খান: আওয়ামী লীগের প্রতি আমেরিকার একটি ঐতিহাসিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল-
আলী রিয়াজ: সেটা অনেকটাই কেটে গেছে নানা ধরনের যোগাযোগের ফলে। (হেসে)' অবশ্য এর অনেকখানি কৃতিত্ব বিএনপি সরকারের ব্যর্থতারও বলা চলে।

মিজানুর রহমান খান:  জেএমবির মতো শক্তি সম্পর্কে মার্কিন বিশ্লেষকদের ধারণা-

আলী রিয়াজ: তাদের সম্ভবত বিচ্ছিন্ন করে দেখা হয় না। কোনো না কোনোভাবে একটা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ রয়েছে বলেই অনুমান করা হয়।

মিজানুর রহমান খান: মধ্যপ্রাচ্যসহ অনেক স্থানের মতো অস্থিতিশীলতায় একটা মার্কিনি ভূমিকা বাংলাদেশেও আশঙ্কা করা হয়।

আলী রিয়াজ: আমার তা মনে হয় না। বরং আমেরিকার স্বার্থের জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতাই জরুরি। বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ওপর যেভাবে প্রভাব ফেলবে, তার একটা আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াও থাকবে। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কিন্তু একে রোখা যাবে না। তার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও জনসংখ্যার কারণে এটা সীমিত থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই 'স্থিতিশীলতা' শব্দটির ওপর জোর দিয়ে এসেছে। কিন্তু তা আবার গণতন্ত্রের বিনিময়ে নয়।

মিজানুর রহমান খান:  আগে অনেক দেশে তারা সামরিক শাসনকে সমর্থন দিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে- 

আলী রিয়াজ: আমার ধারণা, আমেরিকা এখন কোনো রকম সামরিক সরকারকে সমর্থন করবে না।

মিজানুর রহমান খান: ভারতের একজন সাবেক বিদেশ সচিব সম্প্রতি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় লিখেছেন, বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব দূর করতে হলে দিল্লিকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে হবে। আমরাও দেখেছি, বাংলাদেশ অনেক সময় বৃহৎ শক্তির যেমন যুক্তরাষ্ট্র দূরে গেলে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ থাকার একটা প্রবণতা দেখিয়েছে--মন্তব্য করুন।

আলী রিয়াজ: বৃহৎ রাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের যে ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার কথা, বাংলাদেশের মধ্যে তা দেখতে পাওয়া স্বাভাবিক। তার ভেতরকার ভীতি দূর করতে সে একটা ভারসাম্য খুঁজতে উদগ্রীব থাকে। সেটা ধর্মের ভিত্তিতে পশ্চিম এশিয়া কিংবা ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিবেচনায় যথাক্রমে চীন বা জাপানের সঙ্গে করতে পারে।

মিজানুর রহমান খান: যুক্তরাষ্ট্র দূরে সরেছে মনে করে বিএনপি হয়তো চীনের ঘনিষ্ঠ হতে চেয়েছে। কিন্তু চীন কাছে টেনেছে বলে মনে হয় না।
আলী রিয়াজ: চীন কিন্তু টানবে না। চীনের পররাষ্ট্রনীতির ধরনটাই এ রকম। বাংলাদেশের জন্য সে বিশেষ নীতি গ্রহণ করেনি।

মিজানুর রহমান খান: একজন বাংলাদেশি বিশ্লেষক হিসেবে আপনি বাংলাদেশের নতুন সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে চান কীভাবে?

আলী রিয়াজ: বাংলাদেশের উচিত ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন। এটা অবশ্য উভয় দেশের জন্য জরুরি। তবে বাংলাদেশকে উদ্যোগী হলেই চলবে না। ভারতকে প্রয়োজনে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে হলেও এগিয়ে আসতে হবে। ভারতের উচিত এক ধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং 'নন-হেজিমনিক' সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। 

মিজানুর রহমান খান:  স্থিতিশীল বাংলাদেশ যদি মার্কিন স্বার্থের সহায়ক হয়, তাহলে একতরফাভাবে বাঁধ দিয়ে ভারতবিরোধী মনোভাব চাঙ্গা করা কিন্তু পরোক্ষভাবে স্থিতির হুমকি। আপনি কি মনে করেন, এ দিকটি বিবেচনায় নিয়ে মার্কিন নীতিনির্ধারকেরা বাংলাদেশের পক্ষে দিল্লির ওপর তাঁদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রভাব খাটানোর দরকার। আদৌ কখনও মনে করতে পারেন? 

আলী রিয়াজ: এ রকম উপলব্ধি এই মুহূর্তে কতটা আছে সেটা আমি সুস্পষ্ট করে বলতে পারব না। আমার ধারণা, এ সংক্রান্ত তথ্যগুলো এবং তার ধান্ধাটাও আছে। কিন্তু এর কতটা নীতিনির্ধারণে প্রভাব ফেলে তা একটি প্রশ্ন। আমি বরং বাংলাদেশের দিক থেকেই বলব, তাকে এসব বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তবে তা কিন্তু কূটনৈতিকভাবে। 

মিজানুর রহমান খান:  নীরব কূটনীতির ভাষায়, ময়দানে নয়- 

আলী রিয়াজ: ঠিক তাই। আন্তর্জাতিক ফোরামে গিয়ে নয়। বাংলাদেশকে বোঝাতে হবে যে, এখানে স্থিতিশীলতার জন্য এই শর্তগুলো পূরণ করা দরকার। সেটা তখনই সম্ভব, যদি বাংলাদেশের নিজের একটা স্থিতিশীল সরকার থাকে। 

মিজানুর রহমান খান:  একটা সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্কে ভারত সন্দিহান ছিল। কিন্তু এখন?

আলী রিয়াজ: যে পরিবর্তনটা এসেছে, তা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক। কারণ এখন যুক্তরাষ্ট্র প্রশ্নে হ্যাঁ বা না যে সিদ্ধান্তই সে নেবে তা হবে চাপমুক্ত।

মিজানুর রহমান খান: আপনার কি মনে হয় চট্টগ্রামে যুক্তরাষ্ট্রের কনটেইনার টার্মিনাল স্থাপনের আগ্রহ নিতান্তই বাণিজ্যিক, নাকি এখানে একটা সামরিক মনস্তত্ব ক্রিয়াশীল থাকতে পারে?

আলী রিয়াজ: এই মুহূর্তে তা মনে হচ্ছে না। কারণ, এই অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু ভারত বা চীনকে সামরিকভাবে মোকাবিলার চেষ্টা করছে না। দিয়াগো গর্সিয়ায় তাদের সামরিক ঘাঁটি তো রয়েছেই। 

মিজানুর রহমান খান:  আমেরিকা বাংলাদেশে ঘাঁটি চায়-- কথাটা কিন্তু বেশ পুরনো।

আলী রিয়াজ: আমার কাছে তা কখনো মনে হয়নি। তাছাড়া নিরাপত্তাবিদেরাই ভালো জানবেন যে, ওই এলাকায় ঘাঁটির জন্য যে ধরনের নাব্যতা দরকার, তা রয়েছে কি না? আমি কিন্তু পড়েছি সেই নাব্যতা নেই।  [ঈষৎ সম্পাদিত।]


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054810047149658