হবিগঞ্জ জেলার লাখাইয়ে প্রসূতির জরায়ুতে ভাঙা সুঁই রেখেই সেলাই করার দুই মাস পর ফের অস্ত্রোপচার করে তা বের করা হয়েছে।
লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ ঘটনাটি কয়েক মাস আগের হলেও শুক্রবার তা জানাজানি হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কাজী শামসুল আরেফীনও এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী শিপা আক্তার (১৯) লাখাই উপজেলার মোড়াকরি ইউনিয়নের জিরুণ্ডা গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী।
তবে এ ঘটনায় হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও সমাধান মেলেনি। এদিকে ওই প্রসূতির শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে তার স্বামী মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
মনিরুল বলেন, গত ২৮ সেপ্টম্বর তার স্ত্রী শিপা আক্তারের প্রসব ব্যথা শুরু হলে লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে হাসপাতালের মিডওয়াইফ রুবিনা আক্তারের তত্ত্বাবধানে নরমাল ডেলিভারিতে একটি মেয়ে সন্তান হয় শিপার। ডেলিভারির সময় শিপার জরায়ুর কিছু অংশ কাটতে হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকেই সেলাইয়ের জায়গায় ব্যথা অনুভব করে শিপা এবং এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
“এরপর ১৮ নভেম্বর একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে এক্স-রে করলে দেখা যায়, শিপার জরায়ুতে ভাঙা সুইয়ের একটি অংশ রয়ে গেছে। পরে ওই মাসের ২৫ তারিখ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভাঙা সুইয়ের অংশটি বের করা হয়। তবে শিপা এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি।”
মনিরুল আরও বলেন, এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে মিডওয়াইফ রুবিনা আক্তারসহ নার্সদের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর চিকিৎসায় অবহেলা ও জরায়ুতে ভাঙা সুঁই রেখে সেলাই করার অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মিডওয়াইফ রুবিনা আক্তারের মোবাইল ফোনে কল করে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি তড়িঘড়ি করে ফোন কেটে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কাজী শামসুল আরেফীন বলেন, “এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নাই, রুগীর স্বজনদের হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে যদি কোনো নির্দেশনা পাই তাহলে যথাযথ ব্যাবস্থা নেব।”