প্রাথমিকের প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব কার?

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব কে পালন করবেন তা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের থাকলেও গত এপ্রিলে এ ভার স্ব-স্ব বিদ্যালয়কে দিয়ে আদেশ জারি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়গুলো। কিন্তু জুলাইয়ের শুরুতেই সে আদেশ স্থগিত করা হয়। তাই, প্রশ্ন তৈরির দায়িত্ব কে পালন করবেন তা নিয়ে বিভ্রান্ত প্রাথমিকের শিক্ষকরা। তবে, স্থগিত করা আদেশটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিকের প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব উপজেলা শিক্ষা অফিসের থাকবে বলে দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন কয়েকজন বিভাগীয় উপ-পরিচালক।

প্রাথমিকের বেশ কয়েকজন শিক্ষক এ বিষয়ে জানতে দৈনিক শিক্ষা ডটকমের সাথে যোগাযোগ করেছেন। তারা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নের কাজ করছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসগুলো। গত ১০ এপ্রিল আদেশ জারি করে পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব বিদ্যালয়গুলোকে দেন বিভাগীয় উপ-পরিচালকরা। কিন্তু গত ৮ জুলাই প্রশ্ন প্রণয়নের ক্ষমতা বিদ্যালয়গুলোকে দিয়ে জারি করা আদেশটি স্থগিত করা হয়। সামনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা। আমরা বুঝতে পারছি না প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্বভার কার। প্রাথমিকের শিক্ষকরা বিভ্রান্ত। 

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকজন বিভাগীয় উপ-পরিচালক দৈনিক শিক্ষা ডটকমকেকে জানান, কিন্তু, গত ৮ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় উপ-পরিচালকদের সমন্বয় সভায় প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব স্কুলগুলোকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে প্রেক্ষিতে গত ১০ এপ্রিল আদেশ জারি করে পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব বিদ্যালয়গুলোকে দেন বিভাগীয় উপ-পরিচালকরা। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় গত ৮ জুলাই প্রশ্ন প্রণয়নের ক্ষমতা বিদ্যালয়গুলোকে দিয়ে জারি করা আদেশটি স্থগিত করা হয়। আদেশটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিকের প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব উপজেলা শিক্ষা অফিসের থাকবে বলেও জানান উপ-পরিচালকরা।

প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব কেন শিক্ষকদের দেয়া হল এবং কেনই বা আদেশটি স্থগিত করা হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উপ-পরিচালক দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কাছে রয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির মাধ্যমে প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়। যে কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি রয়েছেন। কিন্তু লক্ষ করা যায় প্রশ্ন প্রণয়ন থেকে বিরত থাকায় দক্ষতা হারাচ্ছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের আরও দক্ষ ও পারদর্শী করেতে এবং পাঠ্য বইয়ের সাথে তাদের আরও বেশি পরিচিত করে তুলতে প্রশ্ন প্রণয়নের কাজ স্কুলগুলোকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। গত ৮ এপ্রিল গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে প্রেক্ষিতে জারি করা হয়েছিল।

এই উপ-পরিচালক আরও জানান, কিন্তু লক্ষ করা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন প্রণয়ন না করায় শিক্ষকরা এ দায়িত্ব কতটুকু যথাযথ ভাবে পালন করতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ছাড়া এমন কিছু বিদ্যালয় আছে যাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা খুবই কম। এসব স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদাভাবে প্রশ্ন প্রণয়ন করা ব্যয়বহুল। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব স্কুলগুলোকে দিয়ে জারি করা আদেশটি স্থগিত করা হয়েছে।

তবে, প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব একসময় স্কুলগুলোর হাতে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ উপ-পরিচালক। তিনি জানান, শিক্ষকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব স্কুলগুলোকে দেয়া উচিত। এ দায়িত্ব এক সময় অবশ্যই স্কুলগুলোর কাছে আসবে। তবে, পরিস্থিতি অনুকূলে না হয় এই মুহূর্তে আদেশ স্থগিত করেছেন কর্মকর্তারা  এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভাগীয় উপ-পরিচালকদের পরবর্তী নির্দেশনা দিবেন। সে নির্দেশনা প্রেক্ষিতেই উপ-পরিচালকরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0022971630096436