প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয়

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতারের তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ডিবি কর্মকর্তাদের ভাষ্য, চক্রটি এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অল্প সময়ে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবির অভিযানে গ্রেফতার পাঁচজনের মধ্যে দুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী। তারা হলেন জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্র রায়। গ্রেফতার অন্য তিনজন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রার্থী ছিলেন। তারা হলেন মনিষ গাইন, পংকজ গাইন ও লাভলী ম-ল। তাদের কাছ থেকে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ও প্রশ্নের সমাধান করে চক্রের হোতা অসীম গাইনের কাছে পাঠাতে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ মোবাইল ফোন ঘেঁটে প্রশ্ন ফাঁস-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়।

অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, প্রথমে চক্রের সদস্য ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্রকে আটক করা হয়। তারা দুজনই ঢাবির জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তারা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্ন সমাধানের জন্য পেয়েছেন। এ প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যোতির্ময় গাইনের চাচা অসীম গাইনের মাধ্যমে। প্রশ্নপ্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাসে তাদের দিয়ে প্রশ্ন সমাধান করান অসীম। জ্যোতির্ময়, সুজনসহ সাতজন ঢাবির জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ভবনের ২২৪ নম্বর কক্ষে বসে প্রশ্নের সমাধান করে অসীমের কাছে পাঠান। 

ডিএমপির ডিবির প্রধান আরও বলেন, অসীম তার ভাতিজা জ্যোতির্ময় গাইনকে প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন। অন্যদিকে তিনি পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। বিশেষ করে যাদের সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়স শেষের পথে এমন পরীক্ষার্থীদের খুঁজে বের করতেন। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগেই প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দেন অসীম গাইন।

অসীম গাইনকে গ্রেফতার করতে পারলে চক্রটির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে উল্লেখ করে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তদন্তে এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পেয়েছি তাতে এ চক্রের হোতা অসীম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। সে আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। সে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় করেছেন। এই টাকা দিয়ে গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় রাজনীতির প্রভাববলয়ে থাকা অসীমের মানব পাচার, হুন্ডি কারবার, ডিশ ব্যবসা রয়েছে। যেখানে প্রশ্ন ফাঁস করে আয় করা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তাকে গ্রেফতার করলে কীভাবে সে প্রশ্ন পায় সেই বিষয়টি পরিষ্কার হতে পারব।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.006181001663208