প্রাথমিকের ১০০ প্রধান শিক্ষককে শোকজ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: |

ঝিনাইদহে একশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (স্লিপ) টাকার হিসাব না দেওয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে এই কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করা হয়। গত জুনে কাজ শেষ করে জেলা শিক্ষা অফিসে হিসাব জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তা করেননি। 

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আক্তারুজ্জামান। তিনি দৈনিক শিক্ষাকে জানান, ঝিনাইদহ জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় ৪০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো। গত জুনে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। ৬ উপজেলার মধ্যে শুধু হরিণাকুণ্ডু উপজেলা থেকে কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব দেওয়া হয়েছে। জুন মাসে রমজান থাকায় নির্ধারিত সময় কাজ শেষ করতে পারেননি বলে শোকজ নোটিসের জবাবে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। 

ঝিনাইদহ জেলায় স্লিপ প্রকল্পের আওতায় ৯০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২১৪টি, কালীগঞ্জে ১৫১টি, কোটচাঁদপুরে ৭৪টি, মহেশপুরে ১৫৩টি, শৈলকুপায় ১৮০টি ও হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ২৩৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে গত জুনের আগে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়কে দেওয়া হয় স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের ৪০ হাজার টাকা।

স্লিপ প্রকল্পের বরাদ্দ ও খরচ করানো সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘অগ্রিম হিসেবে উত্তোলিত স্লিপ গ্রান্ডের অর্থ কোনোরূপ বিলম্ব না করে দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করতে হবে এবং ৩০ জুনের মধ্যে স্লিপ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে।’ কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে ভুয়া ভাউচার ও প্রত্যয়নপত্র জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করা হলেও কোন কাজ করা হয়নি। 

মহেশপুরের ১৫ নং কুশাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা খাতুনের কাছ থেকে স্কুল পরিচালনা কমিটির এক সদস্য টাকার হিসাব চাইলে তিনি মানহানি মামালা করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্লিপ কমিটির সভাপতি মকছেদ আলী তিনি নিজেই এই টাকার খবর জানেন না বলে অভিযোগ করেন। তারা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ মহেশপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে জমা দিয়েছেন বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। 

জানা গেছে, শোকজ নোটিস পাওয়ার পর স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা যে জবাব দিচ্ছেন তার সাথে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে সংযুক্ত করছেন। ফলে ওই টাকায় তারা কী কাজ করেছেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে না। এদিকে জবাবদিহিতা না থাকায় প্রতি বছরই স্লিপ প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা নয় ছয় করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। 

ঝিনাইদহ জেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, আগে তো জবাবদিহিতা ছিল না। এখন হিসাব নেওয়া হচ্ছে। এটা একটা নজির বলা যায়। তিনি বলেন, কোন প্রধান শিক্ষক বা কমিটি প্রধান স্লিপের টাকার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে ডিডি খুলনাকে চিঠি দেওয়া হবে। কারো ছাড় দেওয়া হবে না। 

তিনি বলেন, এখনো কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা স্কুল সভাপতির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0022711753845215