প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল ঈদের পর

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

অবশেষে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়া রেকর্ডসংখ্যক ২৪ লাখ চাকরি প্রার্থীর অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ হতে পারে আলোচিত এ নিয়োগ পরীক্ষার ফল। চার ধাপে পরীক্ষা নেয়া হলেও এক সঙ্গেই ফল প্রকাশ করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এএফএম মঞ্জুর কাদির শনিবার বলেছেন, আসন্ন ঈদের পরই ফল প্রকাশের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। কাজ চলছে তবে ঈদের আগে হয়ত প্রকাশ করা যাবে না। ঈদের পর ফল প্রকাশ করতে চাই। চার ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে, ফল চার ধাপে হবে কিনা? এমন প্রশ্নে মহাপরিচালক বলেন, না, চার ধাপে ফল প্রকাশ করা হবে না। একবারেই আমরা ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত বছরের ৩০ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত বছরের ১ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়। ১২ হাজার আসনের বিপরীতে সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ ৫ প্রার্থী আবেদন করেন। সে হিসেবে প্রতি আসনে প্রায় ২০০ প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। রোববার (২৮ জুলাই) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিভাষ বাড়ৈ। 

অন্তত ৭ দফা পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা নিতে সমর্থ হয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। প্রার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট ৪ ধাপে। গত ২৪ মে প্রথম ধাপে ২৫ জেলায় অনুষ্ঠিত পরীক্ষা মোটামুুটি শান্তিপূর্ণ হলেও সাতক্ষীরা ও লক্ষীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টাকালে গ্রেফতার করা হয়েছিল ৪০ অপরাধীকে। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদের আটক করেছিল র‌্যাব। ৩১ মে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা।

দ্বিতীয় ধাপেও বিভিন্ন জেলায় প্রশ্ন ফাঁস, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ওঠে। এ অবস্থায় তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার আগেই শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কঠোর মনিটরিংয়ের নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২১ জুন অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা। এরপর ২৮ জুন শেষ হয় চতুর্থ ও শেষ ধাপের লিখিত পরীক্ষা। শেষ ধাপে দেশের ২৪ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে মন্ত্রনণালয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ পার্বত্য জেলা ব্যতীত এক লাখ ৭৯ হাজার ৭১৭ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় দেড় হাজার বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় এক হাজার ৪৯৫টি নতুন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে।


 
এছাড়া দেশের সব উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ১০০টি উপজেলায় ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৩২৯টি উপজেলায় ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের জন্য প্রকল্প প্রণয়ন কার্যক্রম চলছে।

বাংলা-ইংরেজী পড়তে ও বলতে পারবে শিশু শিক্ষার্থীরা ॥ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ে পারদর্শী করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব বিষয়ে দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে তাদের আলাদাভাবে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার রুটিনও তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়া প্রাথমিকের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে শিক্ষার্থীরা যাতে বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ে লিখতে, পড়তে ও বলতে পারে সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা।

২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালিত হবে। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সব মন্ত্রণালয়কে বিশেষ কিছু করার প্রস্তাব দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতর-বিভাগের প্রধানদের নিয়ে সভা করা হয়। কিভাবে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব তা নিয়ে আলোচনা করে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বিষয়টি বাস্তবায়নে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ে পড়ার দক্ষতা তৈরির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। এটি বাস্তবায়নে অধিদফতরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ - dainik shiksha অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা - dainik shiksha সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে - dainik shiksha শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ - dainik shiksha এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে - dainik shiksha যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038309097290039