প্রাথমিক সমাপনীর খাতা কোডিংয়ে কারচুপির আশঙ্কা

খুলনা প্রতিনিধি |

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার খাতা কোডিংয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিদর্শক, পরীক্ষক এমনকি বিদ্যালয়ের দপ্তরি-কাম-প্রহরীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। খুলনা সদর এলাক থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ফল কারচুপির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বছর নতুন নিয়মে নিজ নিজ থানা-উপজেলার শিক্ষকদের দিয়ে পরীক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন করার নির্দেশনায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়। 

সাধারণ অভিভাবকরা দৈনিক শিক্ষাকে বলেছেন, পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষকরা জড়িত হলে কোডিং ফাঁস হয়ে যাবে। ফলে খাতা মূল্যায়নকারী শিক্ষকরা সহজে কোন স্কুলের খাতা দেখছেন, তা জেনে যাবেন। এতে একশ্রেণির অসৎ অভিভাবক বা কোচিং সেন্টারের মালিকরা সহজে ফল পাল্টে দিতে পারবে।

জানা গেছে, খুলনা সদরে (সিটি করপোরেশন এলাকা) চলতি বছরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ হাজার ১০৭ জন। যার মধ্যে অনুপস্থিত রয়েছে ৩৭৭ জন। শিশু শিক্ষার্থীদের খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রথম থেকেই কোডিং পদ্ধতি প্রচলন করেছে। তবে এ কোডিংয়ের বিষয়টি গোপনীয়তার সঙ্গে করা হয়। শুধু প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের থানা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ কাজ করে থাকেন। স্কুলের শিক্ষক, যাঁরা পরিদর্শক বা পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁদের এ কাজের বাইরে রাখা হয়। কিন্তু খুলনা সিটিতে চলতি পিইসি পরীক্ষার খাতা কোডিংয়ে একাধিক শিক্ষক (যাঁরা খাতা মূল্যায়ন করেন) ও স্কুলের দপ্তরিদের ব্যবহার করা হচ্ছে। বিগত বছরে খুলনা সদরের পরীক্ষার্থীদের খাতা কোডিং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে করা হলেও চলতি বছর থানা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের দ্বিতীয় তলায় করা হচ্ছে। যা অনেক অসৎ অভিভাবক জেনে সদরের প্রাথমিক দপ্তরে গোপনে খোঁজখবর রাখছে।

মিজানুর রহমান, আব্দুল হামিদ, দেবু রায়, আসমা আখতারসহ একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, খাতা কোডিংয়ের এমন বিষয় জানতে পেরে তাঁরা উদ্বিগ্ন। কেউ কেউ এ সুযোগে পরীক্ষার ফল পাল্টে দিতে পারে।

হাজী ফয়েজ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মো. আজম খাতা কোডিংয়ের কাজ করছেন বলে নিশ্চিত করেন। এ ছাড়া বাগমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মো. কামরুল ইসলামসহ একাধিক দপ্তরি কোডিংয়ের কাজ করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষক নেতা ও প্রভাতী রেলওয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে কয়েকজন সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও), অনেক শিক্ষক ও দপ্তরি কোডিংয়ের কাজ করছেন।

খুলনা সদর থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গোপনীয়ভাবে খাতার কোডিং করছি। এটি বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। থানা শিক্ষা কর্মকর্তা ও দক্ষ শিক্ষকরা এ কাজ করছেন। খুলনা সদর এলাকায় সাতটি পর্বে মূল্যায়নকারীরা খাতা দেখবেন। তাই তাঁরা কোন প্রতিষ্ঠানের খাতা দেখছেন, তা জানতে পারবেন না।’

প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক মেহেরুন্নেছা বলেন, ‘খাতা কোডিংয়ের ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হয়। এটি অত্যন্ত গোপনীয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এটি তদারক করেন। তবে শিক্ষকরা এ কাজে অংশ নিতে পারবেন না। আর দপ্তরিদের এমন সুযোগের প্রশ্নই ওঠে না।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024528503417969