প্রাথমিক সমাপনীর প্রশংসাপত্র ২শ, পাঠ্যবইয়ের মূল্য ২০ টাকা!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি |

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র প্রদানে বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারের বিনা মূল্যে দেয়া বইয়ের জন্যও নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা। টাকা না দিলে বই না দেয়ার হুমকিও দেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। উপজেলার চুন্টা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটছে। শফিকুল ইসলাম নামের এক অভিভাবক গত ২রা জানুয়ারি এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন।

অভিযোগের কপি এমপি, ইউএনও ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকটও প্রেরন করা হয়েছে। অভিযোগ পত্র ও স্থানীয় অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশংসা পত্র প্রদান বাবদ ২শ টাকা করে নিচ্ছেন। প্রশংসা পত্র প্রদান কালে টাকা নেয়ার বিষয়টি অবৈধ কিনা জানতে প্রধান শিক্ষক উল্টো হুমকি দেন। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকারি বই বিতরণকালে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০ টাকা আদায় করেন। ২০ টাকা না দিলে বই দেয়া যাবে না বলে জানান প্রধান শিক্ষক। গরিব অসহায় শিক্ষার্থীরাও এ টাকা প্রদান থেকে রেহায় পান না। সম্প্রতি চুন্টা গ্রামের বাসিন্ধা শফিকুল ইসলামের ভাতিজি ইভা সনদ আনতে গেলে প্রধান শিক্ষক তার কাছ থেকে ২শ টাকা রাখেন। সনদ নিতে টাকা লাগবে কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধান শিক্ষক জানান এটা আইন।

এ ছাড়া অভিভাবক ভোলন মিয়া জানান, তার মেয়ে জোনাকির পিইসি পাসের প্রশংসা পত্র আনতে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে। ছেলে দিলার হোসেন ও আরেক মেয়ে রব বানুর বই আনতে গেলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ টাকা করে রাখেন। সরকার দিয়েছে বই। আর উনারা কেন টাকা রাখেন বুঝলাম না। আরেক অভিভাবক আবু তাহের ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, রিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে খুবই কষ্টে সময় পার করছি। সরকার অনেক কিছু ফ্রি দিয়েছে। এ জন্য বাচ্চাদের পড়াই। পিইসি পরীক্ষায় পাস করে আমার মেয়ে খাদিজা বেগমের কাগজটা আনতে গেলাম স্কুলে। প্রধান শিক্ষক বললেন ২০০ টাকা না দিলে কাগজ দেয়া যাবে না। কি করব। টাকা দিয়েই আনলাম।

অভিযোগকারী অভিভাবক শফিকুল ইসলাম বলেন, বিধিবহির্ভূত ভাবে প্রশংসা পত্রের বিনিময়ে টাকা নেয়ার বিষয়টি আমি বিদ্যালয়ের এসএমসি’র সভাপতিকে জানিয়েছি। উনার সঙ্গে কথা বলেই আমি লিখিত অভিযোগ করেছি। উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, প্রশংসা পত্রের জন্য ২০০ টাকা করে নেয়া কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আর সরকারি বইয়ের জন্য একটি টাকা নেয়ারও কোনো বিধান নেই। এটা গুরুতর অপরাধ। এ বিষয়ে জানতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত বণিকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা টাকা নেয়ার বিষয়টি শুনেই হতকচিত হয়ে যান। পরে বলেন, প্রশংসা পত্র ও বই কোনোটির বিনিময়েই টাকা নেয়া যাবে না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসনা হেনা মিলি বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পরে আমতা আমতা করে বলেন বিষয়টি আপনাকে খুলে বলতে হবে। আর আজকে (গতকাল শুক্রবার) শাহজাহান কাকা বিষয়টি শেষ করে দিবেন বলে জানিয়েছেন।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023000240325928