মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেছেন, প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ পদ্ধতির বিকল্প চিন্তা করছে সরকার। অতিরিক্ত বইয়ের বোঝা সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত বইয়ের সংখ্যা খুব বেশি না। কিছু স্কুল সরকার কতৃক নির্ধারিত বইয়ের বাহিরেও আর ও কিছু বই পড়ান। এর পেছনের কারণ বাণিজ্য। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর সেগুন বাগিচার আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে “মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, জেন্ডার সংবেদনশীল ও মানবিক পাঠ্যবই চাই” শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মহিলা পরিষদের উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট আব্দুল মোমেন, শিক্ষাবিদ সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার কখনই বাংলাদেশের সংবিধান ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সাথে আপোষ করবে না। বাংলাদেশে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি অবশ্যই পরাজিত হবে। এসময় প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
শিক্ষাবিদ সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, পরিবার এই প্রজন্মের জন্য খাঁচা, স্কুলগুলো হল কারাগার আর কোচিং সেন্টারগুলো হল কনডেম সেল। তিনি শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্বির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ভাল শিক্ষক না হলে ভাল শিক্ষা পাওয়া যাবে না। এসময় তিনি শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো চালু করার দাবি জানান।
সভায় মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হল, বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, জেন্ডার সংবেদনশীল, অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারমুক্ত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেম ও মানবাধিকারের মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষানীতি এবং সে আলোকে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, অবিলম্বে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু সংস্কৃতি-চর্চা, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যে যে চক্রান্তের ফলে পাঠ্যবই পরিবর্তন করা হয়েছিল তা চিহ্নিত করার জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন, বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, জেন্ডার সংবেদনশীল, অন্ধবিশ্বাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে মাদরাসা শিক্ষার পাঠ্যসূচির পরিবর্তন করতে হবে ও মাদরাসায় সঠিকভাবে পাঠদান করা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে সরকারকে মনিটরিং নিশ্চিত করা, কওমি মাদরাসার পাঠ্যসূচির বিষয়ে সরকারের সক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ও পরিবীক্ষণের ব্যবস্থা করা, একই সাথে তাদের বিজ্ঞানমূখী শিক্ষার আওতায় আনা, সাম্প্রদায়িক শক্তির অপতৎপরতা প্রতিরোধে সরকার ও সব জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে তৎপর থাকার ব্যবস্থা নেয়া।